ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদী হতে গত ৩৬ দিনে মোট ২৭ কোটি টাকার পাথর উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পাথর উত্তোলনকারীরা হচ্ছেন সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ আব্দুল মালেক ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার আরপিননগর আবাসিক এলাকার আবু সালেক মিয়ার পুত্র মোঃ সুহেল মিয়া। কেউ বলছেন এই দুই ব্যক্তির পরিচালিত কথিত সিন্ডিকেটের সদস্য সংখ্যা ১২ জন আর কেউ বলছেন ১৫ জন। তবে সদস্য সংখ্যা যাই হউকনা কেন সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী ধোপাজান চলতি নদী হতে প্রতিদিন কমপক্ষে পচাত্তর লক্ষ টাকার পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে এ চক্রটি। অথচ ধোপাজান চলতি নদী বালি পাথর মহালটির ইজারা বন্ধ রেখেছে সরকারের খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। এমনকি ভূমি মন্ত্রণালয়ও এই বালিপাথর মহালটি ইজারা প্রদান থেকে বিরত রয়েছে গত ২ বছর পূর্ব থেকেই। প্রতিনিয়ত বেআইনীভাবে উত্তোলিত পাথর ট্রলিযোগে বহনের কারণে যেমন এলাকার পরিবেশ দূষণ অব্যাহত রয়েছে তেমনি সরকারী রাস্তাঘাটের ক্ষতিসাধন অব্যাহত রয়েছে। তারপরও সবকিছু ম্যানেজ করে মোটা অংকের টাকা ঘুষ বিনিময়ের মাধ্যমে ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদী বালু পাথর মহাল থেকে প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, টাস্কফোর্সের অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, বিজিবি, ভূমি ও পুলিশ প্রশাসন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের ডলুরা ৪৮ শহীদ মিনার সংলগ্ন ধোপাজান চলতি নদীর পূর্বপাড়ে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গায় বেআইনীভাবে স্তুপীকৃত কিছু বালি পাথর জব্দ করত: নীলাম প্রদান করে। প্রায় ৯৩ হাজার ফুট পাথর ৫০ লাখ টাকায় নীলাম প্রদান করা হয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নতুন গুদীগাঁও নিবাসী চোরাকারবারী আব্দুল মালেক কে। নীলামের মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে আব্দুল মালেক মেম্বার প্রায় ২০ জন পাথর ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গঠন করেন। আগামী ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত নীলামকৃত পাথর সরিয়ে নেওয়ার কথা বলে মাত্র ৪/৫ দিনের মধ্যে নীলামকৃত পাথর সরিয়ে নেন তিনি ও তার সিন্ডিকেট। প্রশাসন নীলামকৃত পাথর ব্যতিত নদী হতে কোন পাথর উত্তোলনের অনুমতি না দিলেও নীলামের কাগজ ও দীর্ঘ সময়কে পুজি করে প্রতিদিন বেপরোয়াভাবে নদী হতে পাথর উত্তোলন করে এই সিন্ডিকেট। সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, পাথর উত্তোলনে নিয়োজিত একজন দিনমজুর প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ ফুট পাথর উত্তোলন করে। ভোর থেকে মাগরিব পর্যন্ত ৩ হাজার দিনমজুর সরাসরি পাথর উত্তোলনে জড়িত রয়েছে। ৩ হাজার মজুর উত্তোলন করে ৭৫,০০০ (পচাত্তর হাজার) ফুট পাথর। গড়ে প্রতিফুট পাথরের মূল্য হিসেবে দিনমজুররা পায় মাত্র ৫০ টাকা। একজন পাথর উত্তোলনকারী ২৫ টুকরীতে ২৫ ফুট পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে ১২৫০ টাকা আয় করে। জনপ্রতি ১২৫০ টাকা আয় করলেও কথিত ক্রেতা বড় ব্যবসায়ীরা তাদেরকে পরিশোধ করে মাত্র ১০০০ টাকা। বাকী আড়াইশ টাকা বিজিবি,পুলিশ প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে দিনমজুরদের কাছ থেকে কেটে নেয় ঐ সিন্ডিকেট। প্রতিদিন আড়াইশ টাকা সিন্ডিকেটচক্র কর্তৃক প্রশাসনের নামে কেটে নেয়ার কথাটি স্বীকার করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কোন কোন দিনমজুররা। অন্যদিকে দিনমজুরদের কাছ থেকে প্রতিফুট পাথর ৫০ টাকা দরে ক্রয় করলেও কথিত ক্রয়কারী রাগব বোয়াল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা ক্রয়কৃত পাথর বিভিন্ন ক্রাশার মালিক, নৌপরিবহন ও ভলগেড মালিকদের কাছে ফুটপ্রতি ১০০ টাকা দরে বিক্রয় করে। সেই হিসেবে প্রতিদিন পচাত্তর হাজার ফুট পাথর উত্তোলনের পর বিক্রয়ের মাধ্যমে মালেক মেম্বার ও তার সিন্ডিকেট চক্ররা হাতিয়ে নিচ্ছে পচাত্তর লক্ষ টাকা। আব্দুল মালেকের সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা দিনমজুরদের কে পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহার করে তাদেরকে ১২৫০ টাকার স্থলে এক হাজার টাকা পরিশোধ করে উত্তোলিত পাথর ক্রয় করে নদীর পূর্বপাড়েই ডাম্পিং করে সাথে সাথে ট্রাক ট্রলির মাধ্যমে নদীর পাড় থেকেই অন্যত্রে বিক্রয় করে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। ধোপাজান চলতি নদী হতে বেআইনীভাবে উত্তোলিত এসব পাথর প্রতিদিন প্রায় ২ শতাধিক ট্রলি দ্বারা ডলুরা হতে হালুয়ারঘাট রোডে বহন করে ক্রাশার মেশিন ও সুরমা নদীতে নৌকাযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রয় করা হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর উত্তোলনের এ মহোৎসব পরিচালিত হলেও পাথর উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে রহস্যজনক কারণে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ৩৬ দিনে মালেক মেম্বার ও তার সহযোগীরা একটানা বিরতিহীনভাবে পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে। প্রতিদিন পচাত্তর লক্ষ টাকা হিসেবে গত ৩৬ দিনে মোট ২৭ কোটি টাকার পাথর উত্তোলনের পর বিক্রি করেছে আব্দুল মালেক ও তার সিন্ডিকেটচক্ররা। শুধুমাত্র নদীর তলদেশ থেকে পাথর উত্তোলনই নয় নদীর পার ভেঙ্গে বালি পাথর উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে কাইয়ারগাঁও গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের পুত্র শফিকুল ইসলাম (৪৮) ও তার ছেলে সজল ও তোফাজ্জুলগং। শফিকুল ইসলামসহ ডলুরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা বলেন, রাজাকারপুত্র শফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীগন কর্তৃক নদীর পার ভাঙ্গনের ফলে ৪/৫টি পরিবার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আব্দুল মালেকের পূর্বের নীলামগ্রহীতা ও তাদের পূর্বের সিন্ডিকেট গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪ দিনে অনুরুপভাবে ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকা পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছে বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় পরিবেশবাদীরা জানান,গত ১২ অক্টোবর ডলুরা ৪৮ শহীদ মিনার সংলগ্ন ধোপাজান চলতি নদীর পূর্বপাড়ে সরকারী খাস খতিয়ানের জায়গায় ৯০ হাজার ফুট পাথর জব্দ করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহরিয়ার, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আলমগীর, বিজিবির কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার একাব্বর, সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার এসআই দিদার উল্লাহ ও র্যাব ৯ সুনামগঞ্জ সিপিসি-৩ এর অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ আলীর নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী। জব্দ করার পর জব্দকৃত পাথরগুলো প্রতি ঘনফুট ৪৮ টাকা রেটে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ মোট ৫৬ লক্ষ টাকায় নীলামে ক্রয় করে সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের পূর্ব ডলুরা নিবাসী আব্দুল ছামাদের পুত্র সাদেক মিয়া ও তার সহযোগীরা। কাগজেপত্রে সাদেকের নামে নীলাম সম্পন্ন হলেও প্রায় ২০/২৫ জন বালিপাথর ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট নীলামের ৫৬ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে। ২৪ নভেম্বরের মধ্যে নীলামকৃত ৯০ হাজার ঘনফুট পাথর সরিয়ে নেয়ার জন্য যৌথবাহিনীর দেয়া লিখিত ক্ষমতাপত্রে নির্দেশ দেয়া হয় তাদেরকে। কিন্তু সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কথিত নীলাম গ্রহনকারীরা জব্দকৃত ৯০ হাজার ঘনফুট পাথর নীলাম গ্রহনের ৩ দিনের মধ্যেই সরিয়ে নিয়ে হালুয়ারঘাটের বিভিন্ন ক্রাশার মালিকের নিকট ও ধোপাজান নদীপথে অন্যত্রে বিক্রয় করেছে। অথচ শুভংকরের ফাকি দিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের নজরদারী এরিয়ে জব্দকৃত স্থান ধোপাজান চলতি নদীর পার হতে গত ১৩ অক্টোবর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৫৪ দিনে ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকার পাথর বেআইনীভাবে উত্তোলন করত: বিক্রয় করে পকেটস্থ করে। একই জায়গায় ডাম্পিং করে যৌথ বাহিনীর ক্ষমতাপত্রকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে দেদারছে বালি পাথর লুটতরাজ চালিয়ে গেলেও দেলোয়ারগংদের বিরুদ্ধে তখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে কল করলে আব্দুল মালেক মেম্বার বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে মোটা অংকের নগদ টাকায় জব্দকৃত পাথর ক্রয় করেছি। যে টাকা সরকারকে দিয়েছি সেই টাকা তুলতে হলে নদী হতে পাথর উত্তোলন না করলে আমাদের টাকা উত্তোলনতো দূরের কথা লাভের মুখ দেখাও সম্ভব নয়। তাই নীলাম বিক্রয়ের মাধ্যমেই প্রশাসন আমাদের কাছে ধোপাজান চলতি নদী বালি পাথর মহালটি বিক্রয় করে দিয়েছে। সুতরাং সাংবাদিকরা যতই লেখালেখি করুকনা কেন সরকার আমাদের পাথর উত্তোলনে কোন অসুবিধা করছেনা এবং ভবিষ্যতেও করবেনা। নীলামের নাম ও সময় ভাঙ্গিয়ে কেন এবং কার হুকুমে প্রতিদিন ধোপাজান চলতি নদী হতে পাথর উত্তোলন করছেন জানতে চাইলে কথিত নীলাম গ্রহীতা আব্দুল মালেক বলেন, আরপিননগর নিবাসী সোহেল মিয়াসহ আমরা ১২ জন ব্যবসায়ী মিলে নদীর সমস্ত পাথর ক্রয় করে নিয়েছি। তাই প্রকাশ্য দিবালোকেই পাথর উত্তোলন ও বিক্রয় করে যাচ্ছি। সবকিছুই ম্যানেজ করে করা হচ্ছে। সুহেল মিয়া বলেন, ব্যবসায়ের জন্য টাকা চাইছে আমি টাকা দিয়ে যথারীতি যথানিয়মে অংশীদার হয়েছি। ব্যবসা করার অধিকার শুধু আমার একার নয় সকলেরই আছে। মূল কথাটি হচ্ছে একটি সরকার ১৫ বছর আছে। এখন তাদের বিদায়ের বেলায় নদীমহালের কে মা আর কে বাপ বুঝার কোন উপায় নেই। আপনারা সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন ইজারাবিহীন একটি মহালে কিভাবে বালিপাথর নীলাম হয়। আর নিলাম নিয়ে কিভাবে বালি পাথর উত্তোলন করা হয়। আর উত্তোলন যদি বেআইনী বা অবৈধ হয় তাহলে প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের কোন ভূমিকা না থাকার অর্থ কি ? ইউএনও অফিস যাকে নীলাম দিয়েছে সে কিভাবে ২৭ কোটি টাকার পাথর উত্তোলন করেছে বা করেনি এর জবাব সে দিবে। এখানে আমার কোন দায় দায়িত্ব নেই। বারকী শ্রমিক সংঘের সভাপতি মোঃ কাদির মিয়া বলেন,প্রতিদিন ৩ হাজার বারকী শ্রমিক পাথর উত্তোলনের কাজ করে। একজন বারকী শ্রমিক প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ ফুট পাথর উত্তোলন করতে পারে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে এক ফুট পাথর ক্রয় করে ৫০ টাকা দরে। কিন্তু তারা বিক্রয় করে ১০০ টাকা দরে। সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ.কে.এম আবু নাসার ও সাধারন সম্পাদক মোঃ ফজলূল করিম সাইদ বলেন, কথিত নীলাম গ্রহীতা ও তার সাথে সংঘবদ্ধ চোরাকারবারী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বেআইনী জনতাবদ্ধে সংগঠিত হয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে আইন লংঘন করে প্রশাসনের বিনা বাধায় দিনে ও রাতে ইজারাবিহীন ধোপাজান নদী হতে বালি পাথর উত্তোলন করে যাচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দ্বারা বালি পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে এক সময়ের কোয়ার্টার কিলোমিটার প্রশ্বস্থ ধোপাজান নদীর পার ভেঙ্গে বর্তমানে ৩ কিলোমিটারের বেশী দূরত্ব ও প্রশ্বস্থব্যপী এলাকায় পরিণত করেছে। সরকারের উচিত নদীভাংগন ও বেআইনীভাবে বালি পাথর উত্তোলনকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ক্ষতিপূরন আদায়সহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোঃ রসিদ আহমদ বলেন,সরকারের খনিজ সম্পদ লুটতরাজ হচ্ছে। অথচ এই ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদকে কোন দায়িত্ব দেয়া হচ্ছেনা। উপজেলা প্রশাসন থেকে যদি আমাদেরকে মহালটি অন্তত দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হতো তাহলেও আমরা সেখানে যেতাম দেখতাম। কিন্তু কারা কিভাবে নীলাম দিচ্ছে আর কারাই বা নিলাম নিয়ে বেআইনীভাবে নদী ও ঘরবাড়ী ভেঙ্গে পাথরবালি উত্তোলন করছে তা আমি জানিনা। আর মালেক মেম্বার নীলাম ক্রয় করে যদি বেআইনীভাবে পাথর উত্তোলন করে আইন লঙ্ঘন করে থাকেন তাহলে তার দায় দায়িত্ব জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়ন পরিষদ নেবেনা। উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজু বলেন, আব্দুল মালেক মেম্বার তিনি দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ইদানিং তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তিনি ইজারাবিহীন একটি বালি পাথর মহালে প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর উত্তোলন করে উত্তোলিত পাথরগুলো ট্রাকট্রলিযোগে হালুয়ারগাঁও রাস্তা দিয়ে অন্যত্রে বিক্রি করে ব্যক্তিগতভাবে ফায়দা হাছিল করে সরকারী রাস্তাঘাট ভাংচুর ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটাবেন। আমরা জাতীয় পার্টি তার ব্যক্তিগত ফায়দা হাছিলের বা সিন্ডিকেট ব্যবসার দায় নেবোনা। জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসুদ আলী বলেন, আব্দুল মালেক মেম্বারদের দলের কোন ঠিক ঠিকানা নেই। সারাজীবন দেখলাম তাকে বিএনপি করতে ইদানিং বলছে সে নাকি জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছে। এরা আসলে সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী। ব্যবসায়িক সুবিধা নিতে রাতারাতি দলবদল করতে তাদের বেশী সময় লাগেনা। সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ এজাজ আহমদ বলেন, বালি পাথর উত্তোলনে বিধিনিষেধ এর দায় দায়িত্ব উপজেলা প্রশাসনের উপর বর্তায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার যদি আমাদেরকে কোন পদক্ষেপ গ্রহনের কথা বলেন তাহলে আমরা এ ব্যাপারে সহযোগীতা প্রদানে সর্বদা প্রস্তুত আছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইমরান শাহরীয়ার বলেন,বালি পাথর উত্তোলনের সংবাদ পাওয়া মাত্র প্রশাসনকে জানান এবং সংবাদ পরিবেশন করুন। প্রকাশিত সংবাদগুলোকে আমরা ডকুমেন্ট হিসেবে গণ্য করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডির সহকারী পরিচালক (ভূ রসায়ন) মোঃ আজিজুল হক বলেন, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক হচ্ছেন জেলা খনিজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি। বালি ও খনিজ সম্পদ হচ্ছে সরকারের রাষ্ট্রের সম্পদ। এই সম্পদ সংরক্ষণ করার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। তারা যদি এই মূল্যবান খনিজ সম্পদ লুটতরাজের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহনে ব্যর্থ হন তাহলে ব্যর্থতার দায় দায়িত্ব তাদেরকে নিতে হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট পর্যায়ে আলোচনাক্রমে সিদ্বান্ত নেবো। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বলেন, সিন্ডিকেট প্রকাশ্য দিবালোকে ইজারাবিহীন ধোপাজান চলতি নদী বালি পাথর মহাল থেকে পাথর উত্তোলন করছে অথচ প্রশাসন কেন নীরব আমি বুঝতে পারছিনা। সাংবাদিকদের উচিত সত্যিকার অর্থে এখানে কি ঘটছে তা সরজমিনে দেখে সঠিক তথ্য তুলে ধরা। শেষ পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলা বা উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করে সেদিকে দৃষ্টি এখন সকলের।