শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বরগুনায় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের সরকারি সহায়তা প্রদান করা হবে হাসান নাসরুল্লাহর মৃত্যু নিশ্চিত করল হিজবুল্লাহ প্রশাসনে আওয়ামী লীগের দোসরদের রেখে সংস্কার সম্ভব নয়: রিজভী বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে: তারেক রহমান এফএসআইবিএল এর চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের শাখা ব্যবস্থাপক সম্মেলন লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বোমা মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিত ভাবে পাথর উত্তোলন, ভূমিকম্প ও ভূমি ধ্বসের আশংকা ভরা মৌসুমেও ইলিশের চড়া দাম ক্রেতাদের নাভিঃশ্বাস চিকনিকান্দি সেতুর বেহাল অবস্থা চরম ভোগান্তি জামায়াত নেতারা দেশ থেকে পালায় না: মৌলভীবাজারে এড. মতিউর রহমান আকন্দ কালিয়ায় সেনাবাহিনীর হাতে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আটক-৪

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত শিখা ‘নেভানো’ ঘিরে দিল্লিতে বিতর্ক

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২২

একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি সেনার আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মের ঠিক পরের কথা। সেই যুদ্ধে পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গন মিলিয়ে ভারতেরও ৩ হাজারেরও বেশি সেনা প্রাণ হারিয়েছিলেন আর তাদের স্মৃতিতেই কিছুদিন পর দিল্লির আইকনিক রাজপথের এক প্রান্তে ‘অমর জওয়ান জ্যোতি’র উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, দিন-রাত একটানা প াশ বছর ধরে প্রজ্জ্বলিত থাকার পর সেই অগ্নিশিখা আচমকাই ‘নির্বাপিত’ হলো দুদিন আগে শুক্রবার বিকালে আর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ধিকি ধিকি বিতর্কের নতুন আগুন জ্বলে উঠেছে দেশজুড়ে। ভারতে নরেন্দ্র মোদি সরকার অবশ্য বলছে, অমর জওয়ান জ্যোতির শিখা আদৌ নেভানো হয়নি– ওই শিখা বরং মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে অদূরেই যে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল (জাতীয় যুদ্ধ স্মারক) নির্মিত হচ্ছে তার অগ্নিশিখার সঙ্গে। কিন্তু অনেকে এই যুক্তি মানছেন, অনেকে মানছেন না সবচেয়ে বড় কথা, ভারতীয় সেনার ‘ওয়ার ভেটারেন’ বা যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনানীরা পর্যন্ত এই ইস্যুতে দুভাগ হয়ে পড়েছেন!
ভারতের সাবেক এয়ার ভাইস মার্শাল মনমোহন বাহাদুর যেমন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে ট্যাগ করে টুইট করেছেন, ‘স্যার, অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখা সমগ্র ভারতের সাইকি বা মনস্তত্ত্বের অংশ। আপনি, আমি ও বহু প্রজন্ম আমাদের নির্ভীক জওয়ানদের সেখানে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়েই বেড়ে উঠেছি। জাতীয় যুদ্ধ স্মারক একটি দারুণ উদ্যোগ হলেও অমর জওয়ান জ্যোতির স্মৃতি কখনোই মুছে ফেলা যাবে না। আপনাকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানাই!’
দেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও কার্গিল যুদ্ধের নায়ক জেনারেল বেদপ্রকাশ মালিক অবশ্য এই যুক্তির সঙ্গে একমত নন। তিনি বলছেন, ‘এটা একটা অনাবশ্যক বিতর্ক এ নিয়ে রাজনীতি করার কোনও মানেই হয় না। মনে রাখতে হবে, আমরা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেই বহু বছর ধরে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছি আর এখন যখন তা শেষ হওয়ার মুখে, তাই সেখানকার অগ্নিশিখার সঙ্গে অমর জওয়ান জ্যোতিকে মিশিয়ে দেওয়াটাই স্বাভাবিক। বিদেশি অতিথিরা এলেও তাদের শ্রদ্ধার্পণের জন্য আমরা তো দুটো জায়গায় নিয়ে যেতে পারব না একটাতেই নিয়ে যাবো।’
তবে কেউ কেউ আবার বিষয়টাকে একটু ভিন্নভাবেও দেখছেন – তাদের মতে অমর জওয়ান জ্যোতির সঙ্গে বাংলাদেশ যুদ্ধের যে স্মৃতি জড়িয়ে ছিল সেটা এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও আহত হলো।
লে. কর্নেল মনোজ চান্নান যেমন বলছিলেন, ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালকে আমিও ভীষণ সম্মান করি – কিন্তু প্রতিটা যুদ্ধের সঙ্গেই আসলে তাতে শহীদ হওয়া সেনাদের বিশেষ স্মৃতি জড়িয়ে থাকে। একাত্তরের যুদ্ধে যে ভারতীয় সেনারা বলিদান দিয়েছেন, তাদের প্রিয়জন ও নিকটাত্মীয়রা এতে ব্যথিত হবেন বলেই মনে করি!’ ‘আর এমন তো নয় যে ভারত সরকার অমর জওয়ান জ্যোতিতে একটি বাড়তি অগ্নিশিখা জ্বালিয়ে রাখার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছিল’, কিছুটা শ্লেষের সঙ্গেই যোগ করেন তিনি।
একাত্তরের যুদ্ধে অংশ নেওয়া মেজর জেনারেল জি জি দ্বিবেদী আবার এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, ‘এই অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত হয়েছিল ১৯৭১ যুদ্ধের পর। কিন্তু ঘটনা হলো, এর পরের পাঁচ দশকেও আমরা বহু সেনাকে হারিয়েছি … সিয়াচেন, কার্গিল, লাদাখোসহ সীমান্তের বহু জায়গাতেই। সেই পটভূমিতে শুধু বাংলাদেশ যুদ্ধের জন্য আলাদা একটি স্মৃতিসৌধ ও অগ্নিশিখা থাকলে হয়তো সেই সেনাদের প্রতি কিছুটা অমর্যাদাই করা হয়। তার চেয়ে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে একটি শিখা থাকাই বাঞ্ছনীয়।’ ভারতে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও সামরিক বিশ্লেষকরা আবার কেউ কেউ অনুযোগ করছেন, অমর জওয়ান জ্যোতিকে যে অন্যত্র একটি অগ্নিশিখার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে সরকার তা আগেভাগে জানায়নি বা কারও সঙ্গে আলোচনাও করেনি। সেটা হলে অনভিপ্রেত এই বিতর্ক এড়ানো যেত বলেই তাদের অভিমত।- বাংলাট্রিবিউন




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com