দেশে গত জানুয়ারি মাসে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশের শরীরে অমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। বাকি ২০ শতাংশের শরীরে পাওয়া গেছে ডেলটার ধরন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) অন্তর্র্বতীকালীন প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানুয়ারি মাসে ১ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত সংগ্রহ করা নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং (জিন নকশা উন্মোচন) করে গত বুধবার এ প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্বব্যাপী ছড়ানো করোনার সাতটি ধরনের মধ্যে পাঁচটিকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে। আইইডিসিআরসহ মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দেশে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করেছে। বাকি তিন প্রতিষ্ঠান হলো আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি), ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভস (আইদেশি) এবং চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ)।
চার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ১৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ১১৮টি বা ৮০ শতাংশ অমিক্রন এবং ৩০টি বা ২০ শতাংশ ডেলটা ধরন পাওয়া গেছে। অমিক্রনের মধ্যে আবার অমিক্রন বিএ১ ৩৯ শতাংশ এবং বিএন২ ৪১ শতাংশ। আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীর এ প্রতিবেদন নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, অমিক্রন ধরন মৃদু মনে করে একে হেলাফেলা করার একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সেটা বড় ধরনের ভুল। একসঙ্গে এটি অনেক মানুষকে আক্রান্ত করে। তাই একে মৃদু ভাবার কোনো অবকাশ নেই।
করোনার হাত থেকে বাঁচতে টিকা নেওয়া এবং স্বাস্থ্যবিধি পালনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা দেখছি অমিক্রনের পাশাপাশি ডেলটার উপস্থিতিও রয়ে গেছে। তাই টিকা নিতেই হবে। আর বয়স্ক ব্যক্তি এবং যাঁরা অন্য গুরুতর রোগে আক্রান্ত, তাঁদের জন্য অবশ্যই তা নিতে হবে এবং তাঁদের সাবধান থাকতে হবে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৮ হাজার ১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে ছয়দিন ধরেই করোনা শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে রয়েছে। আগের দিন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৮ হাজার ৩৫৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৪৩ জনের। সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট ১৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৭১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ জন। মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৭০৩ জনের। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১০ হাজার ৭২৫ জন।