রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন

‘বিপদ মুহূর্তের’ মুখোমুখি হচ্ছে বিশ্ব : গুতেরেস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস বলেছেন, বিশ্ব বর্তমানে এক ‘বিপদের মুহূর্তের’ মুখোমুখি হচ্ছে। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সদর দফতরে ইউক্রেন ও রাশিয়ারে মধ্যে চলমান সংকটের বিষয়ে সংস্থাটির বিশেষ সাধারণ অধিবেশনে এই কথা বলেন তিনি। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব সতর্ক করে জানান, সংঘর্ষ যদি ইউক্রেনে বিস্তার করে তবে বিশ্ব বহু বছর না দেখা চরম এক নির্মমতা প্রত্যক্ষ করতে পারে। তিনি বলেন, ‘এখনো সময় আছে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার এবং সংলাপ ও আপোসরফার পথে ফিরে যাওয়ার।’ গুতেরেস বলেন, কোনো প্রকার রক্তপাত ছাড়া সংকটের সমাধানে তিনি পূর্ণমাত্রায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর আগে বৃহস্পতিবার পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জেরে সোমবার বিদ্রোহীদের দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’কে স্বীকৃতি দিয়ে শান্তি রক্ষায় রুশ সৈন্য পাঠানোর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এরপর থেকেই ইউক্রেন ঘিরে চলমান উত্তেজনা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রুশপন্থী সরকারের পতনের পর রাশিয়া দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়ে ক্রিমিয়া অঞ্চলটি দখল করে নেয়। পাশাপাশি মস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ব ইউক্রেনে বিপুল অঞ্চল দখল করে নেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী। পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীরা দুই রাষ্ট্র ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ ও ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা করে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই সংঘর্ষ বন্ধে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ২০১৪ সালে বেলারুশের মিনস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়া এক চুক্তি করে। মিনস্ক চুক্তি অনুযায়ী এই অঞ্চলে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময় ও দোনবাস অঞ্চল থেকে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের সরে যাওয়ার বিষয় যুক্ত ছিলো। দোনবাস অঞ্চল থেকে রুশপন্থী বিদ্রোহীরা সরে গেলে ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গণভোটের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু পরস্পরের প্রতি সহিংসতার অভিযোগের জেরে এই চুক্তি আর বাস্তবায়িত হয়নি। এরই মধ্যে ২০২০ সালে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের ন্যাটো সামরিক জোটের ‘ইনহ্যান্সড অপারচুনিটি পার্টনার’ পদ পেলে রাশিয়া ক্ষুব্ধ হয়। নিজ দেশের সীমান্তে ন্যাটোর সম্প্রসারণের শঙ্কায় রাশিয়া ইউক্রেনের যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক জোটে যোগ দেয়ার বিরোধিতা করছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের পর উত্তেজনা নতুন করে বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় এক লাখ সৈন্য ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করেছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, ইউক্রেনে হামলার জন্যই রাশিয়া ওই সৈন্য সমাবেশ করেছে। কিন্তু রাশিয়া এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সামরিক বাহিনীর মহড়ার অংশ হিসেবে ওই সৈন্য সমাবেশ করা হয়েছে। পরে কিছু সৈন্য সরিয়ে নেয়ারও ঘোষণা দেয় রাশিয়া। কিন্তু তাতেও ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো আশ্বস্ত না হয়ে ইউক্রেন সীমান্ত থেকে সব সৈন্য সরিয়ে নেয়ার আহ্বান অব্যাহত রাখে। সৈন্য সমাবেশের জেরে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে রাশিয়ার সম্পর্কে উত্তেজনা প্রশমনে বিভিন্ন পন্থায় কূটনেতিক সমাধানের চেষ্টা চলছিলো। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্টের ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের প্রতি স্বীকৃতি দান ও মিনস্ক চুক্তিকে ‘অকার্যকর’ ঘোষণার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধকে প্রায় অনিবার্য করে তুলেছে। সূত্র : বিবিসি ও আলজাজিরা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com