মৌলভীবাজারের বড়লেখায় পাঁচ দিনব্যাপী নাট্যোৎসব, বইমেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বুধবার শেষ হয়েছে। সাংস্কৃতিমনা জাকির হোসেন জুমনের একক পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বড়লেখা উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম বড়লেখায় তারুণ্য নাট্য গোষ্ঠী এই উৎসবের আয়োজন করে। এ উৎসবে তারুণ্য নাট্য গোষ্ঠী ছাড়াও মৌলভীবাজার, সিলেট, ঢাকাসহ একাধিক থিয়েটার ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নাটক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। বুধবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টায় সমাপনী দিনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীর সভাপতিত্বে এবং তারুণ্য নাট্যগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস দে শুভ্র, সহ-সভাপতি হানিফ পারভেজ, নাট্য কর্মী সাদিয়া আক্তার লিলির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন তারুণ্য নাট্যগোষ্ঠীর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ পারভেজ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পৌর মেয়র আবুল ইমাম মোঃ কামরান চৌধুরী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ উদ্দিন, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন রুমি, সিলেট নাট্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল লতিফ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার, চেয়ারম্যান এসোসিয়েশনের সভাপতি আজির উদ্দিন ও তারুণ্য নাট্যগোষ্ঠীর সভাপতি প্রভাষক বদরুল ইসলাম মনু প্রমূখ। মৌলভীবাজার নাট্য গোষ্ঠী ‘জেগে ওঠ হে মহা মানব’ নাটকটি পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এ উৎসব শেষ হয়। শনিবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যায় উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটারের সাবেক সভাপতি ম-লীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। এদিন মণিপুরী থিয়েটার কমলগঞ্জ ‘কহে বীরাঙ্গনা’ নাটক পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন থেকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত পাঁচটি নাটক মঞ্চায়িত হয়। এর মধ্যে ৫ মার্চ মণিপুরী থিয়েটার কমলগঞ্জ মঞ্চায়ন করে ‘কহে বীরাঙ্গনা’, ৬ মার্চ থিয়েটার মুরারিচাঁদ সিলেট মঞ্চায়ন করে ‘পানিবালা’, ৭ মার্চ তারুণ্য নাট্যগোষ্ঠী বড়লেখা মঞ্চায়ন করে ‘পদ্মাপাড়’, ৮ মার্চ অনুস্বর থিয়েটার ঢাকা মঞ্চস্থ করে ‘মূল্য অমূল্য’, এবং ৯ মার্চ সমাপনী সন্ধ্যায় দৃষ্টিপাত মৌলভীবাজার মঞ্চস্থ করে ‘জেগে ওঠ হে মহা মানব’। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবদান রাখায় ‘গুণীজন সম্মাননা’ ও উপজেলার নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। উৎসবে নাটকের পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, নৃত্যানুষ্ঠান, কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক ও বাউল গানের আসর বসে। জেলা প্রশাসকের বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের রুটিন ওয়ার্কের বাহিরে গিয়ে ৫ দিনব্যাপী আয়োজিত নাট্যোৎসবের সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলীর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞ এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সুযোগ্য পুত্র জাকির হোসেন জুমনের একক পৃষ্টপোষকতার জন্য এরকম অনুষ্ঠান সম্ভব হয়েছে সেজন্য জাকির হোসেন জুমনকে কৃতজ্ঞতা জানান। তারুণ্য নাট্য গোষ্ঠীকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান একটি প্রান্তিক উপজেলায় ৫ দিনব্যাপী অনাড়ম্বর আয়োজনের জন্য। তিনি আরোও বলেন সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের জায়গা থেকে রাষ্ট্রীয় যতটুকু সহযোগিতার দরকার তা অবশ্যই পাবেন এবং জেলা অডিটোরিয়াম মঞ্চ নাটকের জন্য দ্রুত উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলা হবে। তারুণ্য নাট্যগোষ্ঠী দীর্ঘ ৩০ বছর থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছে। সেজন্য তাঁরা প্রশংসার দাবি রাখে।