পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। রোজার প্রথম দিনে এমন সংকট দেখা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। রোববার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, পল্লবী ও রামপুরার বাসিন্দারা বাংলানিউজের মাধ্যমে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রমজানের প্রথম দিনেই গ্যাসের সংকটে চুলা জ্বলেনি রাজধানীর বেশ কয়েকটি এলাকায়। ফলে ইফতারি তৈরিসহ রান্নার কাজে ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীবাসী। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই ইফতারি ও রান্নার কাজ করতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোস্ট করেছেন ফেসবুকে।
জানা গেছে, রাজধানীর জিগাতলা, শ্যামলী, কল্যাণপুর, আগারগাঁও, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর, কাফরুল, আদাবর, বনশ্রী, রামপুরা, বসুন্ধরা আবাসিক, আজিমপুর, লালবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, গ্রিন রোড, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, নারিন্দা, ওয়ারিসহ পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকা। এছাড়া মিরপুর ১, ২ ও ১০ নম্বর এলাকায়ও গ্যাসের সংকটে ইফতারি ও রান্নার কাজ করতে ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকেই। এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৭ দিন অর্থাৎ ১০ এপ্রিল পর্যন্ত এ সমস্যায় পড়তে হবে রাজধানীবাসীকে। রোববার সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যুৎ ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, বিবিয়ানা ক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন হঠাৎ করে সমস্যা তৈরি হওয়ায় তার প্রভাব পড়ে সারা দেশে। বিশেষ করে রাজধানীর গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থায়। শেভরন পরিচালিত এই গ্যাসক্ষেত্রে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। অভিজ্ঞ প্রকৌশলীরা মেরামতের কাজ করে যাচ্ছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে আশা করা যাচ্ছে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশের বড় গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মধ্যে বিবিয়ানা অন্যতম। সেই ক্ষেত্রের ৬টি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের যোগানের সংকট তৈরি হয়েছে। আর যার প্রভাব পড়েছে রাজধানী ঢাকায়। সংকট কাটিয়ে গ্যাসের চাপ স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সূত্র আরও জানায়, বিবিয়ানার ৬টি কূপ থেকে শনিবার রাতে গ্যাস উত্তোলনের সময় বালি উঠতে শুরু করে। এ কারণে গ্যাস উত্তোলন কাজ বন্ধ করে দিতে হয়। এ কারণে রাতে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এর প্রভাব পড়ে সরবরাহ ব্যবস্থায়।
রেস্টুরেন্টে ভিড় : রাজধানীবাসী জানিয়েছেন, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রমজানের প্রথম দিনে এভাবে গ্যাস না থাকায় আমাদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। এটা রমজানের প্রথম দিনে কোনো মতেই কাম্য নয়। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা তানজিন আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এভাবে গ্যাস সংকট মেনে নেওয়া যায় না। সকাল থেকে কোনো রান্নাবান্না করা সম্ভব হয়নি। প্রথম রোজায় বাইরের খাবার কিনে খেতে হবে। সকাল থেকেই নিভু নিভু আগুনে কোনো কিছুই করা সম্ভব হয়নি বলে জানালেন মিরপুর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা নার্গিস কবির। তিনি বলেন, সকাল থেকেই আমাদের এখানে গ্যাস না থাকার মতো। কোনো কিছুই করা যাচ্ছে না। রমজানে এ রকম পরিস্থিতি হবে চিন্তাও করা যায় না।
এদিকে এসব এলাকায় হোটেল ও ইফতারের দোকানগুলোতে তীব্র ভিড় দেখা গেছে ক্রেতাদের। অনেক ক্রেতাকেই ইফতার না কিনেই বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।