রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন

চৌহালীতে অসময়ে যমুনায় ভাঙন

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ এপ্রিল, ২০২২

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীতে আকস্মিকভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে। ফাগুন ও চৈত্র মাসে শান্ত-¯িœগ্ধ যমুনা নদী হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত দুই সপ্তাহে ভাঙনে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায় অর্ধশতাধিক ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে মিটুয়ানী নৌঘাট। কিন্তু ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ভাঙনের মুখে পড়েছে মিটুয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইতি মধ্যে বাঘুটিয়া ইউনিয়নের যমুনার তীরবর্তী গ্রামে ব্যাপক আকারে ভাঙন শুরু হয়েছে। গত সোমবার থেকে ওই ইউনিয়নে যমুনা নদীর তীরে সরেজমিন দেখা গেছে, নিজের জমিতে লকলকিয়ে বেড়ে ওঠা বাড়ন্ত ফসলি ক্ষেতের অপ্রাপ্ত গাছগুলো কাটছেন নতুন বিনানুই গ্রামের কৃষক রাহাত ও কালু খা। ফসলি জমি নয়, যেন নিজের ভাগ্যকেই কাঁচি দিয়ে কাটাছিলেন মধ্যবয়সী এই কৃষকগুলো। ফাল্গুন ও চৈত্র গরমে ঘামে নয়, তার চোখ দুটো ছলছল করছিল নদীর ভাঙন দেখে। এই চিত্র এখন চৌহালীর দক্ষিণ অঞ্চলের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা। খাষপুখুরিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু দাউদ সরকার জানান, শুষ্ক মওসুমে যমুনা নদীর এমন তা-ব এলাকাবাসী আগে কখনো দেখেনি। দুর্গত মানুষের আহাজারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা এবং সরকারি দফতরে পৌঁছাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ ধরেই নিয়েছে, বর্ষা মওসুম ছাড়া অন্য সময় নদী ভাঙে না। তিনি আরো বলেন,এই অঞ্চলের পশ্চিম দিকে যমুনার মাঝখানে বিশাল চর জেগে ওঠায় ভাঙনের তীব্রতা এত ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মিটুয়ানী ও চর সলিমাবাদ আব্দুর রহমান , ইয়াছিন ম-ল ও চাষী রফিক ইসলাম জানান, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা কৃষকরা দিন দিন আরো নিঃস্ব হবো। চৌহালীর সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ হাট – বাজার দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে। তারা আক্ষেপ করে জানান, চরে আশ্রিত এমন অনেক পরিবার রয়েছে, যারা এক সময় বিঘা বিঘা জমির মালিক ছিল। অথচ এখন তারা অন্যের জমিতে মজুরি খেটে সংসার চালাচ্ছে। টাকার অভাবে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে পারছে না। নদীভাঙন রোধে যমুনার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের সংস্কারকাজে শত কোটি টাকা খরচ করা হলেও যমুনা নদীর চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলের আগ্রাসন বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবছর পূর্বপাড়ের ফসলি জমি আর জনপদ গ্রাস করবে যমুনা। ভাঙন রোধের নামে এক শ্রেণীর ঠিকাদার আর কিছু অসাধু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী বিস্তর টাকার মালিক হবে। তবে আমার মতো ভাঙনকবলিত নিঃস্ব মানুষগুলোর হাহাকার থেকেই যাবে। বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্যা জানান, যমুনা নদী শুকিয়ে ছোট-বড় চরের সৃষ্টি হয়েছে। নদীটি এখন ছোট খালে পরিণত হয়েছে। ভাঙা-গড়ার খেলায় মেতে নদী আজ যেন ক্লান্ত। জেগে ওঠা চরে এখন চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফসলের। ড্রেজিং করে স্রোতধারা চালু করলে নদীটি রক্ষার সাথে সাথে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, যমুনা নদীর ভাঙন রক্ষায় অর্থ বরাদ্দ হলে কাজ শুরু করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com