করোনা মহামারি কাটিয়ে সবাই যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, এমন সময়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগকে আত্মঘাতী বলছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর সময় এখন নয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা আরও বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুৎের দাম বাড়বে কি না এ সিদ্ধান্ত আসতে হবে রাজনৈতিকভাবে। আমলাদের থেকে নয়।
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, বিটিএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, বিজিএমইএর সহ সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ অন্যরা। এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, কুইক রেন্টালের এক সময় প্রয়োজনীতা ছিল। এখন আর তার প্রয়োজনীয়তা নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা উচিত। অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করা উচিত। গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো অকার্যকর অবস্থায় পড়ে আছে। সরকার সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সরকারের ভুল পরিকল্পনার খেসারত শিল্প খাত বহন করতে পারে না। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি হবে সরকারের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এ সময় জসিম উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি না করে এখন সরকারের উচিত হবে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের আমূল সংস্কার আনা। অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। বিদ্যুতের অতিরিক্ত উৎপাদন বন্ধ করে অহেতুক খরচ কমিয়ে আনা। বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আনোয়ার উল আলম বলেন, দেশে এখন ডলার সংকট চলছে। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে। এখন যদি বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়, উৎপাদন খরচ বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে ভোক্তার উপর।
এখন বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সময় নয়। বিকেএমইএর সহ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, রপ্তানি খাত যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে ভয়াবহ। প্রতিযোগী দেশের চেয়ে পিছিয়ে যাবে বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। যার ফলে জনজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।