বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাইফ মাহমুদ জুয়েল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপর পুলিশি হামলা, মামলা ও গ্রেফতার বন্ধ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি দিয়েছেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল। গতকাল শনিবার (২১ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানির প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।
সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, এই অবৈধ সরকারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সময় অতিক্রম করছে প্রিয় মাতৃভূমি। ঈদুল ফিতরের পর অল্প ক’দিনের ব্যবধানে কোনো কারণ ছাড়াই কয়েকবার ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বারবার গ্রেফতারের চেষ্টা ছাত্রসমাজকে খুবই মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা ছাত্রদল এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এ অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতার প্রথম মেয়াদ থেকেই বিরোধী দল ও মতের মানুষের উপর খড়গহস্তে নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে আসছে। জেল-জুলুম আর অত্যাচার-নির্যাতনকেই ক্ষমতায় টিকে থাকার মানদ- হিসেবে বেছে নিয়েছে। না হলে বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বর্তমানে যখন কোনো নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচির চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক সেসময় ছাত্রদল সভাপতিকে বারবার গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে হয়রানি, গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।
ছাত্রদল সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কোনোদিনই রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে ছিল না। তাদের রাজনৈতিক শিষ্টাচারহীনতার বহু উদাহরণ এদেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করেছে। সেই তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলো ছাত্রদল সভাপতিকে বিনা কারণে বারবার গ্রেফতারে ও হয়রানির অপচেষ্টা।
তিনি বলেন, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ শুক্রবার দিবাগত রাতে ধানমন্ডিতে নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করছিলেন। এসময় সাত-আটজন সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের প্যান্টের বেল্ট ধরে টানাহেঁচড়া করে তাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায়। তাদের সাথে দুই গাড়ি পুলিশ ছিল। কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও তার সাথে থাকা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের ৪৫-৫০ নেতাকর্মীর উপর পুলিশ অশালীন আচরণ ও মারধরের ঘটনা ঘটায়।
সাইফ জুয়েল বলেন, উপস্থিত নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হয়ে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুর রহমান বাবুকে বেধড়ক মারধর করে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কার্যালয় থেকে বাসায় যাওয়ার পথে গুলশান থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম জাসামকে কাকরাইল মোড় থেকে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ সকালে রাজধানীর ডিওএইচএস এলাকায় চোখ ও হাত বাধা অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। অবিলম্বে আটক ছাত্রদলের সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান সাইফ মাহমুদ জুয়েল। তিনি বলেন, দেশে যখন ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মহাসমারোহে চলছে লুটপাট, হত্যা, গুম, খুন আর ধর্ষণ তখন প্রশাসন এসব অরাজকতাকে প্রতিরোধ না করে মদদ দিয়ে আরো উৎসাহিত করছে। ছাত্রলীগের অপকর্ম আর দেশজুড়ে চলমান অরাজকতাকে আড়াল করতেই সরকার পরিকল্পিতভাবে ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেফতারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসার মোহাম্মদ ইয়াহিয়া উপস্থিত ছিলেন।