আগামীকাল ১ জুন, বুধবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুঁড়ি স্টেশন থেকে ঢাকা সেনানিবাস স্টেশন পর্যন্ত তৃতীয় ভারত-বাংলাদেশ ট্রেন সার্ভিস ‘মিতালি এক্সপ্রেস’-এর কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত হয়েছে বাংলাদেশ। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং তার ভারতের সমকক্ষ অশ্বিনী বৈষ্ণব যৌথভাবে ভার্চুয়াল ফর্ম্যাটে এখানে ভারতের রেল মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর রেল ভবন থেকে ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ যাত্রার উদ্বোধন করবেন। বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী এক সপ্তাহের সরকারি সফরে শনিবার ভারতে এসেছেন। ট্রেন উদ্বোধন করা ছাড়াও, মন্ত্রী লখনৌ, বারানসী, রায়বেরেলি এবং তুঘলকাবাদ সফর করবেন এবং সেখানকার কিছু রেল কোচ কারখানা পরিদর্শন করবেন। এদিকে, ভারতের রেল প্রতিমন্ত্রী দর্শনা জারদোশ আজ ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ উদ্বোধনের আগে পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুঁড়ি রেল স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। তিনি স্টেশনের কার্যক্রম, জনসেবা এবং স্টেশনে পরিচ্ছন্নতা রক্ষণাবেক্ষণ পর্যালোচনা করেন।
তিনি এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-পূর্ব সীমন্ত রেলওয়ের নিউ জলপাইগুঁড়ি রেলওয়ের স্টেশন পরিদর্শন করেছি। স্টেশনের কার্যক্রম, জনসেবা এবং রেলওয়ে স্টেশনে পরিচ্ছন্নতা রক্ষণাবেক্ষণ পর্যালোচনা করেছি।’
মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, মন্ত্রী বলেন যে মিতালি এক্সপ্রেস দ্বিপক্ষীয় সংযোগের পাশাপাশি পর্যটন সম্ভাবনাকে জোরদার করতে সহায়তা করবে এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লোকেদের স্টেশনের চারপাশে চলাচল করতে সহায়তা করার জন্য এলাকায় একটি হাসপাতাল, শপিং মল এবং কম দামের হোটেল তৈরি করা হবে।
সূত্রের খবর, নিউ জলপাইগুঁড়ি থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে ৫১৩ কিলোমিটার যেতে ট্রেনটির সময় লাগবে নয় ঘণ্টা। এটি একটি ডিজেল ইঞ্জিন দ্বারা পরিচালিত হবে এবং এতে চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিন কোচ এবং চারটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত চেয়ার কার থাকবে।
ভারতের উত্তর রেলওয়ের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা (সিপিআরও) মিডিয়াকে জানান, ‘মিতালি এক্সপ্রেস’ উত্তর পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুঁড়ি স্টেশন থেকে সকাল ১১.৪৫ টায় ছেড়ে যাবে এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০ টায় ঢাকা পৌঁছবে।
এটি ভারতের দিকের শেষ স্টেশন হলদিবাড়িতে এবং বাংলাদেশের দিকে প্রথম স্টেশন চিলাহাটিতে চালক পরিবর্তনের জন্য শুধুমাত্র ১০ মিনিটের জন্য থামবে। এছাড়া এটির আর কোন বিরতি নেই।
সিপিআরও জানান, ফিরতি যাত্রার সময় মিতালি এক্সপ্রেস সপ্তাহে দুই দিন সোম ও বৃহস্পতিবার, ঢাকা সেনানিবাস থেকে নিউ জলপাইগুঁড়ি চলবে। এটি ঢাকা সেনানিবাস থেকে ২১টা ৫০ মিনিটে ছাড়বে।
ভারতের রেল সূত্র জানায়, ট্রেনটি বাংলাদেশ সময় ০৫টা ৪৫ মিনিটে চিলাহাটি (বাংলাদেশ) এ পৌঁছবে। এটি ০৬টা ১৫মিনিটে চিলাহাটি থেকে ছাড়বে। ট্রেনটি ভারতীয় সময় ০৬টায় হলদিবাড়ি (ভারত) পৌঁছবে এবং হলদিবাড়ি থেকে ০৬টা ৫মিনিটে ছাড়বে এবং ভারতীয় সময় ০৭টা ১৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুঁড়ি পৌঁছবে।
তারা যোগ করেন যে এই যাত্রার জন্য নিউ জলপাইগুঁড়ি স্টেশন এবং কলকাতা রেলওয়ে স্টেশনের বিদেশী যাত্রী সংরক্ষণ ব্যবস্থা কাউন্টারে ট্রেনের টিকিট পাওয়া যাবে।
এদিকে, অন্য দুটি ইন্দো-বাংলাদেশ যাত্রীবাহী ট্রেন মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং বন্ধন এক্সপ্রেস যাদের কার্যক্রম কোভিড-১৯ বিধিনিষেধের কারণে ব্যাহত হয়েছিল, আজ তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করা মৈত্রী এক্সপ্রেস ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভাগ করার পর থেকে দুটি দেশের মধ্যে চালানো প্রথম ট্রেন। বন্ধন এক্সপ্রেস সেই বছরের পরের দিকে যাত্রা শুরু করে।