চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম মনে করেন, বাজেটে কর্মসংস্থান সৃজনে তেমন কিছু নেই। কর্মসংস্থান বাড়ার জন্য কিছুই নেই। শুধু বিদেশে যে অভিবাসীরা যাচ্ছেন, সেটা আগামী বছর বাড়বে বলা হচ্ছে। মালয়েশিয়া লাখ দুয়েকের মতো নেবে। বাজেটে সেটা উৎসাহিত করার জন্য কিছুই করা হয়নি।
এবার বাণিজ্য ঘাটতি নিরসন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ডলার সংকট নিরসন এগুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। সেটা সঠিক হয়েছে। অতএব আমদানিকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে হবে। না হলে ডলার সংকট কাটবে না। ডলার সংকটে এখন লেনদেনে ৯১ টাকা ৫০ পয়সা এবং কার্ব মার্কেটে ১০২ টাকায় উঠে গেছে। এ গ্যাপ যদি কমানো না যায় তাহলে হুন্ডি চাঙ্গা হবে। তাহলে ফরমাল চ্যানেলে আমাদের রেমিট্যান্স অত বেশি আসবে না। অতএব পার্থক্যগুলো কমিয়ে আনতে হবে। সেটা এ বাজেটে চেষ্টা করা হয়েছে। বাজেট প্রস্তাব ঘোষণার পর গত ৯ জুন তিনি সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছন।
করপোরেট কর এবার না কমালেই ভালো হতো। ৩০ থেকে কমিয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশে আনা হয়েছে। এটা ব্যবসায়ীদের খুশি করার জন্যই করা হয়েছে। এটি এ সময়ে প্রয়োজন ছিল না। ৩০ শতাংশে রেখে দিলে সেটাই যথার্থ হতো। এটা আমি খুব সমর্থনযোগ্য মনে করি না। বিনিয়োগে যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেটা চেষ্টা করা হয়েছে। এমনিতেই বিনিয়োগ ক্ষতি হচ্ছিল না। যেটাতে ক্ষতি হচ্ছিল সেটা হলো মুদ্রাস্ফীতি। মুদ্রাস্ফীতি তো বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে না। মুদ্রাস্ফীতি সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত বেশি করে। অতএব মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না এলে পুরো অর্থনীতিই আগামী বছর খুব সংকটে থাকবে এবং ডলার সংকট আরো সাংঘাতিকভাবে বেড়ে যাবে।
ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া এ বছর যে খুব বেশি বাড়বে না, বরং সঞ্চয়পত্র কিছুটা কমানো হচ্ছে। গত বছর যা নিচ্ছিল এ বছর তার চেয়ে কম নেয়া হবে। তবে বিদেশ থেকে বেশি নেয়ার একটা চেষ্টা আছে। এখন সেটা কতটুকু সাফল্য পাবে সেটা দেখার বিষয়।