কয়েকদিনে টানা বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভারতীয় আসাম সীমান্ত আঁকা বাঁকা বয়ে যাওয়া জিঞ্জিরাম নদীর ও ব্রম্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। ফলে বর্ষার শুরুতেই জিঞ্জিরাম নদের পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার পূর্বাঞ্চল এবং ব্রম্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রখর ¯্রােতের রূপ ধারন করে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ক্ষতিসাধিত হবে প্রায় ৫ শত হেক্টর জমির আউশ ধান, পাট, তিল, চিনা, সাকসবজি ও বিভিন্ন ফসলাদিসহ বিলীন হয়ে যাবে কাজ বন্ধ থাকার বামতীর রক্ষাবাঁধের আংশিক কাজ ঘরবাড়ি জমিজমা। জলে ভেস্তে যাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা। গতকাল উপজেলার পুর্বাঞ্চল সীমান্ত এলাকা বড়াইবাড়ী, ইজলামারী, চর ইজলামারী, বারবান্দা, চরবারবান্দা খেওয়ারচর বকবান্দা, নামা বকবান্দা, কড়াইকান্দি, মাদারটিলা, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে জিঞ্জিরাম ও ধর্ণি নদির পানি উপচে জমির আউশ ধান, পাট, তিল, চিনা, সাকসবজি, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলাদি পানির নিচে নিমজ্জিত হয়েছে। অন্যদিকে বন্দবেড় ইউনিয়নের বলদমারা, বাইশ পাড়া, ও ফলুয়ারচর গিয়ে দেখা গেছে ভারি বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে ব্রম্মপুত্র নদের পানি বেড়ে উপজেলার চরশৌলমারী, ঘুঘুমারী, চর ঘুঘুমারী, খেরুয়ারচর, খেদাইমারী, চর খেদাইমারী, সাহেবের আলগা, বলদমারা, বাইশ পাড়া, ফলুয়ারচর, যাদুরচরের দিগলা পাড়া, ধনারচর, রাজিবপুরের চর রাজিবপুর, কোদালকাটি ও মহনগঞ্জ ব্রম্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে কৃষকের পাট, আউশ ধান, ফুরঙ, চিনা, কাউন, তিল, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলে পানি উঠেছে। ব্রম্মপুত্র নদ পারের বসবাসরত বাসিন্দা বলদমারা ঘাট মাষ্টার মজিবর রহমান, আমজাদ হোসেন, জয়নাল আবেদীন, আবু সাঈম, সহিবর রহমান, বেলাল হোসেন, আবু সিদ্দিক, সিরাজুল হক, ময়নুদ্দিনসহ বলদমারা ঘাটে থাকা আরো অনেকে মনের মাঝে দুঃখ্য ও অঝরা কান্নার চোখে বলেন, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার ব্রম্মপুত্র নদের বামতীর রক্ষাবাঁধের কাজ শেষ না করে অনেক ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে গেছেন। ফলে ব্রম্মপুত্র নদের পানি উপচে গেলে ভাঙ্গন সৃষ্টি হবে। আমরা ঘরবাড়ি, হাস মুরগি, গরু ছাগল, স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিপাকে পরে যাব। নদের অন্যান্য এলাকায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল কাদের সরকার বলেন, কয়েকদিনের টানা বর্ষনে ব্রম্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদের ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এদিকে বামতীর রক্ষাবাধের কাজটিও শেষ করতে পারেনি। অন্যান্য এলাকায় যে ভাবে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে এখানেও নদী ভাঙ্গণ থেকে রক্ষা পাবে না এলাকাবাসী। এতে ক্ষতি হয়ে যাবে সরকারের বরাদ্দের অর্থ। অন্যদিকে মানুষের ঘরবাড়ি ও জমাজমি। উপজেলার পুর্বাঞ্চল জিঞ্জিরাম ও ধর্ণী নদির পানি উপচে গিয়ে এলাকায় প্লাবিত হয়ে ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে খুব একটা ক্ষতি হবে না। তিল, তিষি, পাট, আউশ ধান, মরিচ, সাকসবজিসহ প্রায় ২ শত হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হতে পারে। তবে বোরো ধান বা কেটে নেয়ার মতো কোন জাত থাকে তারাতারি কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোড নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ব্রম্মপুত্র নদের বামতীর সংরক্ষণ কাজের বিষয়ে বারবার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করলে তিনি মোবাইল ফোনের রিং অনেক সয়ম কেটে দেন এবং অনেক সময় রিসিভও করেন না। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারঃ) ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল আলম রাসেল জানান, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে নদের পানি উপচে উপজেলার পুর্বাঞ্চল এলাকার কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং কিছু ফসলাদিও তলিয়ে গেছে। ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলা হয়েছে।