ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন সুনামগঞ্জের মানুষে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষার্থীরাও। বন্যায় বইপত্র ভেসে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। বিশেষ করে নতুন করে বইসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ কেনার সামর্থ্য না থাকায় দরিদ্র পরিবারের পরীক্ষার্থীরা আছে অধিক বিপদে।
তেমনই একজন করাতকলের শ্রমিক বিষ্ণু দাসের এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে জয়া দাস। বসতঘরে পানি ঢুকে অন্যান্য মালামালের সঙ্গে বেশ কিছু বই নষ্ট হয়ে গেছে। তার বাবার পক্ষে এখন নতুন বই কেনা সম্ভব নয়। অথচ কিছুদিন পরই এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই পরিস্থিতিতে জয়া দাস বই পড়া ছাড়া কীভাবে পরীক্ষায় অংশ নেবে, তা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।
বিষ্ণু দাস বলেন, আমার অবস্থা ভালো না। কার কাছে টাকা চাইবো, বই তো কিনতে হবে। মেয়েটার চিন্তা বুঝি। কিন্তু আমার তো সামর্থ্য নাই। একই এলাকার আরেক এসএসসি পরীক্ষার্থী মেহেদী হাসানেরও একই অবস্থা। তারও সব বই পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। বাজারে দোকানপাট খোলার সঙ্গে সঙ্গে তার বাবা আবদুস সামাদ তার জন্য বই কিনতে গিয়েছিলেন। কিন্তু লাইব্রেরিতে বই পয়েছেন মাত্র একটি। লাইব্রেরির মালিকেরা জানিয়েছেন, বন্যায় তাদের দোকানের বইপত্র নষ্ট হয়েছে। বই এলে পাবেন।
সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) শিক্ষাবিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক প্রবীণ শিক্ষক যোগেশ্বর দাশ বলেন, এই বন্যায় শিক্ষার্থীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। তাদের পড়াশোনার যেমন ক্ষতি হয়েছে, তেমনই অনেকের বইপত্র নষ্ট হয়েছে। আমরা মনে করি প্রথমেই এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের প্রবেশপত্র হারিয়েছে এবং যাদের বইপত্র কেনার সুযোগ নেই, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত তাদের সহায়তা করতে হবে। জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্টদের দ্রুত এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আমরা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেবো। যাদের প্রবেশপত্র হারিয়েছে বা নষ্ট হয়েছে, তাদের দ্রুত সেগুলো সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। আবার যাদের বইপত্রের সমস্যা আছে, কেনার সামর্থ্য নেই, আমরা কিনে দেবো।