চট্টগ্রামের আকাশে ঝলমলে রোদ, নেই বৃষ্টি। তবে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে কর্ণফুলীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় নগরের বেশকিছু নিচু এলাকা। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ।
গেল দু-তিনদিন ধরে দুপুর হলেই জোয়ারের পানি ওঠে চট্টগ্রামের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। প্লাবিত হয় রাজাখালী রোড, পূর্ব বাকলিয়া, তক্তার পুল, আগ্রাবাদ, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের পুরনো ভবনের সামনের এলাকা এবং আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিকের নিচু এলাকা। জোয়ারের পানি থাকে বিকেল পর্যন্ত। গতকাল শনিবার বিকেলে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, টানা তিনদিন জোয়ারের পানি উঠেছে চট্টগ্রামের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, শুটকিপট্টি ও আসাদগঞ্জে। আজও দুপুর একটার পর থেকে পানি ওঠা শুরু হয়, পরে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পানি নেমে যায়।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গোডাউন ও দোকানে পানি উঠছে। দোকানে ও রাস্তায় পানি ওঠার কারণে ক্রেতারা দোকানে আসতে পারছেন না। দোকানের বেচা বিক্রি কমে গেছে। এ ছাড়া তিনদিন পানি ওঠায় অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চাক্তাই, রাজাখালীসহ খাতুনগঞ্জ এলাকায় খালের মুখে স্লুইস গেটের কাজ চলছ। এখনো শেষ হয়নি। তাই বৃষ্টি ছাড়াই পূর্ণিমায় জোয়ারে পানির উচ্চতা বাড়লে খাতুনগঞ্জে পানি প্রবেশ করে। স্লুইস গেটের সুফল পাচ্ছি না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই। আগ্রাবাদ এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করা শহিদুল সুমন ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি ছাড়াই জোয়ারে গত দুদিন ধরে আগ্রাবাদে পানি উঠছে। এ পানির মধ্য দিয়েই কষ্ট করে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে হচ্ছে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ইছাহাকের পুল এলাকার বাসিন্দা আলম বলেন, বৃষ্টি নেই। শুধুমাত্র জোয়ারের পানিতে রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। বৃষ্টি হলে কী হতো জানি না।
আগ্রাবাদ সিডিএ এলাকার বাসিন্দা নাইমুল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ জোয়ারের পানিতে সড়ক তলিয়ে যায়। বছরের পর বছর এ সমস্যা চলছে। অথচ সমাধান মিলছে না। সিডিএ এলাকার কয়েকটি জায়গায় সড়ক উঁচু করা হলেও নিচু এলাকায় ঠিকই জোয়ারের পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারের পানি যাতে নগরে প্রবেশ না করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। মহেশখালে যে স্লুইস গেট স্থাপন করা হচ্ছে, তার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা ( ডিএফও) মো. হারুন উর রশিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি উচ্চতায় জোয়ার হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে। আজ (শনিবার) কর্ণফুলী নদীতে দুপুরে জোয়ার ছিল সর্বোচ্চ। পানির উচ্চতা ছিল ৫ দশমিক ৩৮ মিটার। রোববার জোয়ারের পানির উচ্চতা একটু কমবে। পানির উচ্চতা থাকবে ৫ দশমিক ২৭ মিটার।