রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
আমার কথা বলে চাঁদা-সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করলে পুলিশে দিন : আসিফ নজরুল তিস্তার পানি দ্রুত বাড়ছে আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান ঢাকার খাল দিয়ে ব্লু নেটওয়ার্ক তৈরির পরিকল্পনা করছে সরকার : পানিসম্পদ উপদেষ্টা শিক্ষাব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদ ও নাস্তিক্যবাদ বরদাস্ত করা হবে না : মামুনুল হক নৌকা থাকায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন হতে পারে : উপদেষ্টা আদর্শিক ভিন্নতা থাকলেও সবাই একসঙ্গে জাতি গঠনে কাজ করবে: মঞ্জুরুল ইসলাম জাতিসংঘে ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা মাহমুদ আব্বাসের মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে ভাষাসৈনিক অধ্যাপক আব্দুল গফুরের দাফন ছাত্র-জনতার অদম্য সংকল্প ও প্রত্যয় স্বৈরাচার থেকে আমাদের মুক্তি দিয়েছে

ট্রাফিক পুলিশ: দাবদাহে নাকাল, তবু দায়িত্বে অনড়

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৮ জুলাই, ২০২২

দেশের ১১টি অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে দাবদাহ। তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। কিন্তু বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকার কারণে গরম অনুভূত হচ্ছে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এ অবস্থায় বেশ বিপাকে পড়েছেন সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। তপ্ত রোদেও সড়ক ছাড়ার উপায় নেই তাদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে কড়া রোদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তারা।
ট্রাফিক পুলিশের মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচ- রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ পুলিশ বক্স টিনশেডের। প্রচ- গরমে তা আগুনের মতো তপ্ত হয়ে থাকে। গরমে ট্রাফিক পুলিশ সদগস্যদের কারও কারও ডিহাইড্রেশন হচ্ছে। জ্বর-ঠান্ডা খুব স্বাভাবিক হয়ে গেছে। গতকাল সোমবার (১৮ জুলাই) রাজধানীর শেরে বাংলা নগর, বিজয় সরণী, তেজগাঁও ও কাকরাইল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কে দাঁড়িয়ে এক হাতে মাথার ওপর ছাতা ধরে আরেক হাতে ট্রাফিক সিগনাল পরিচালনা করছেন ট্রাফিক সদস্যরা। যানবাহনের শব্দ, প্রচ- গরমে কাহিল হয়ে পড়লেও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সড়কেই থাকতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। বিজয় সরণি ট্রাফিক সিগনাল মোড়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুইজন সার্জেন্ট, চারজন এএসআই ও কনস্টেবল নিয়মিত এখানে ডিউটি করেন। তাপপ্রবাহের কারণে ঘণ্টাখানেক পরপর একজন রেস্টে যাচ্ছেন, আরেকজন দাঁড়াচ্ছেন সিগনালে। তবে ট্রাফিক বেড়ে গেলে চাপও বেড়ে যায়, তখন আর বসে থাকার উপায় থাকছে না।
বিজয় সরণি এলাকায় দায়িত্বরত আজমীর নামে এক সার্জেন্ট জানান, যেকোনো মানুষের পক্ষে এই উত্তপ্ত আবহাওয়ায় ১০ মিনিট দাঁড়ানো কঠিন। সেখানে আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘসময় ডিউটি করা খুবই কঠিন। আমাদের অনেক সদস্যের ডিহাইড্রেশন হচ্ছে, ঘেমে জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এরপরও রাস্তা ছেড়ে যাওয়ার উপায় থাকছে না আমাদের। তিনি বলেন, আমাদের ছাতার ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। স্যালাইন ও পানি সরবরাহ করা হয়েছে। পানি বেশি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। শেরে বাংলা নগর এলাকায় দায়িত্বরত এক সার্জেন্ট বলেন, এই গরমে বুট পরে সড়কে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। শরীর ঝলসে যাওয়ার মতো গরম। ছাতা হাতে কতক্ষণ দাঁড়ানো যায়। দরকার ভালো সুবিধার পুলিশ বক্স।
তেজগাঁও ট্রাফিক সিগনালে গিয়ে দেখা যায়, বটগাছের নিচে একজন দাঁড়িয়ে আউটগোয়িং সড়কের সিগনাল সামলাচ্ছেন, আরেকজন রোদে দাঁড়িয়ে আছেন। সেখানে কথা হয় ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, ঈদের পর অফিস আদালত-খুলে গেছে। ঢাকা ফিরতে শুরু করেছে চিরচেনা রূপে। যদিও এখনও চাপ কম, কিন্তু অত্যধিক গরম। এই ভ্যাপসা গরমে আমাদের বেশ কষ্টই হচ্ছে। আমাদের তো সড়ক ছাড়ার উপায় নেই। সড়কের মধ্যে থেকেই শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হচ্ছে।
কাকরাইল মোড়ে কথা হয় এক ট্রাফিক কনস্টেবলের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু চাপ বাড়ছে ডিউটিরত অন্য সহকর্মীদের ওপর। আমার জানা মতে, গত দুই বছরে শুধু চাপই বেড়েছে ট্রাফিকে। কিন্তু জনবল বাড়েনি, উল্টো কমেছে। বাড়তি চাপ আর কম জনবলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যে অনেক জায়গায় ট্রাফিক পুলিশ বক্স নেই। তখন কোনো ভবনের নিচে অথবা একটু দূরে গাছের ছায়ায় বসে রেস্ট নিতে হয়।
জানতে চাইলে ডিএমপির তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার সাহেদ আল মাসুদ বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের ট্রাফিক সদস্যদের পানি ও স্যালাইন সরবরাহ করেছি। তাদের পরামর্শ দিয়েছি বার বার পানি খেতে। ট্রাফিক বক্সগুলো আমরা সংস্কার করার চিন্তাভাবনা করছি। কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের তো নিজস্ব কোনো সম্পত্তি বা জমি নেই। সড়ক তো সিটি কর্পোরেশনের। কিছু করতে হলে সিটি কর্পোরেশন থেকে বাধা আসে। অনেক সময় অনুরোধ করে ট্রাফিক বক্স তৈরি কিংবা সংস্কার করতে হয়।
তিনি বলেন, আমাদের জনবল কমছে। অসুস্থ হলে তার রিপ্লেসমেন্ট পাচ্ছি না। যে কারণে চলতি দায়িত্বে থাকা সদস্যদের এই গরমে খুব কষ্ট করতে হচ্ছে। নিরুপায় অবস্থার কথা স্বীকার করে লালবাগ ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মেহেদি হাসান বলেন, আমাদের মাঠ পর্যায়ের সদস্যদের খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জনবল কম। কারও অনুপস্থিতি আমরা পূরণ করতে পারছি না। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা চাপের কাজ। তার মধ্যে এই ভ্যাপসা গরম বাড়তি চাপ-কষ্ট তৈরি করেছে। আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের জন্য বাজেটও নেই যে তাদের ফলমূল, পানি ও স্যালাইন সরবরাহ করব। তবে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে পুলিশ হাসপাতাল থেকে স্যালাইন সরবরাহ করছি। পানিটা নিজ উদ্যোগ বিভাগ থেকে দিচ্ছি। যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, আমি নিজেই কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। প্রত্যেকটি ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনারকে বলেছি তারা যেন মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের এ গরমে অসুবিধা-কষ্টগুলো দেখভাল করেন।- ঢাকা পোস্ট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com