গত ৩১ জুলাই ভোলায় পুলিশের গুলিতে দু’জন নিহত এবং ১৬ জন আহতের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার গ্রেফতার দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার দুপুরে নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান। ভোলায় বিএনপি’র বিক্ষোভে পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আব্দুর রহিম এবং ছাত্রদল নেতা নূরে আলম নিহতের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সরকারের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, অযৌক্তিকভাবে শুধুমাত্র রাষ্ট্র ক্ষমতা ব্যবহার করে পুলিশ র্যাব ব্যবহার করে জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছেন এবং ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বহু হত্যা করেছেন, গুম করেছেন, খুন করেছেন, তার ধারাবাহিকতায় আমাদের নূরে আলম এবং আব্দুর রহিমকে হত্যা করা হয়েছে। আজকে আমি পরিষ্কারভাবে জানতে চাই, আমাদের দাবি উত্থাপন করতে চাই, কী অবস্থা করেছিল তারা যে ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাদের গুলি করলেন পয়েন্ট দিয়ে। এই পুলিশ অফিসারের গ্রেফতার চাই এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, হঠাৎ করে মধ্যরাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কী সর্বনাশ হয়েছে, প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়বে, কৃষকের সারের দাম বাড়বে। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, অর্থনীতি খারাপ হয়ে যাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে বিশ্বে তেলের দাম কমে আর আমাদের দেশে বাড়ে। কৃষকরা চোখে অন্ধকার দেখছে। তিনি বলেন, এভাবে আর হবে না। এদেশের মানুষ এভাবে আর চলতে দেবে না। এই সরকারকে আর টিকতে দেয়া যায় না। রাজনৈতিক ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বিএনপি মুখপাত্র বলেন, আমি গতকালও বলেছি নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হই। এই সরকার কিছু মানুষকে ধনী করছে, যারা আরো বেশি ধনী হয়ে গেছে আর যারা গরীব, তাদের আরো গরিব করেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের পকেটে তো ঘুষের টাকা আছে লুটের টাকা আছে, আমাদের পকেটে তো জীবন চলার টাকা নেই।
সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, অবিলম্বে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে তারপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও জানান তিনি। জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বিএনপি ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, ফরিদপুর বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।