আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি গতবার জাতীয় নির্বাচনের আগে জগাখিচুড়ির ঐক্য করে ধরা খেয়েছে, এবারও ধরা খাবে। গতকাল বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশব্যাপী পাঁচ শতাধিক জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। তারপর থেকে দিনটি সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আগুন-সন্ত্রাস ও বোমাবাজি করে ক্ষমতায় যাওয়ার দিন শেষ। খেলা হবে আগামী নির্বাচনে। খেলা হবে রাজপথে। খেলা হবে, মোকাবেলা হবে। ফখরুল সাহেব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পায়ের নিচে মাটি নেই।’ দেখেছেন? বঙ্গবন্ধুর মাজারে জনতার ঢল, সমাবেশে জনতার ঢল। আপনারা কী নিয়ে খেলবেন?’
তিনি বলেন, বন্দুকের নল থেকে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি, রাজপথ থেকেই আওয়ামী লীগ জন্ম হয়েছে। বিএনপি জাতিসঙ্ঘে গিয়ে নালিশ করা প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতিসঙ্ঘের বিচার করার এখতিয়ার নেই। বিদেশীদের কাছে বিচার দেয়া বিএনপির ঐতিহ্য।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, এই বাংলাদেশে আপনাদের কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই। আমাদের নেত্রী গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন বলেই ওই নয়াপল্টনে বসে কথা বলতে পারেন। তবে সেই কথা যদি শিষ্টাচারবহির্ভূত হয় তাহলে তার দাঁতভাঙ্গা জবাব দেয়া হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, আজকে তো শুধু নমুনা দেখালাম এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপি-জামায়াতকে বঙ্গোপসাগরে ফেলব। যেখানেই বিএনপি-জামায়াত সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের কলঙ্কময় দিন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে উগ্র মৌলবাদী রাষ্ট্র গড়ার চক্রান্ত করে আসছিল। তার চূড়ান্ত মহড়া ছিল ১৭ আগস্ট। সারাদেশে একসাথে ৬৩ জেলায় পাঁচ শতাধিক জায়গায় সিরিজ বোমা হামলা হয়েছে। এটা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা ছিল না। তারা বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। বিএনপি ২০১৩-১৪ সালে জনগণের ওপর পেট্রোল বোমা মেরেছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তাদেরকে আর জনগণের ক্ষতি করতে দেয়া হবে না, আজ থেকে আমরাও মাঠে নামলাম।
বিএনপিকে পেট্রোল বোমা বাহিনী আখ্যা দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এই পেট্রোল বোমা বাহিনীকে জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে দেব না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম ও এস এম কামাল হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমদ মন্নাফী, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি ও মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বক্তব্য রাখেন।
পরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে মৎস্য ভবন-কদম ফোয়ারা-প্রেসক্লাব ও জিরোপয়েন্ট হয়ে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সূত্র : বাসস