কুমিল্লা থেকে আম, পেয়ারা, ডেউয়া, কাউ, মাল্টার চারা রপ্তানি হচ্ছে কাতার ও আরব আমিরাতে। এতে নার্সারি খাতে সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা। তবে রপ্তানিতে সব সংস্থার আরও বেশি আন্তরিকতার দাবি করেছেন রপ্তানিকারকরা। গাছের চারা রপ্তানির দিগন্ত উন্মোচন করেন কুমিল্লা লাকসাম উপজেলার বিজরা গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মমিন।
আবদুল মমিন বাসসকে জানান, ১৯৮০ সালে তিনি কাতারে যান। সেখানে ইলেকট্রিক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। কাতারে তখন অর্থনৈতিক মন্দা চলছিল। তার বেতন কমে যায়। নিজের অবস্থা পরিবর্তনের আশায় নার্সারির ব্যবসা শুরু করেন। তার নার্সারির নাম আল নাইমি ল্যান্ড স্কেপিং নার্সারি। কাতারে তার ৩০ বছর ধরে নার্সারির ব্যবসা। তিনি ইতালি, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হল্যান্ড, চায়না থেকে ফুল ও ফলের চারা আমদানি করতেন। তিন বছর আগে বাংলাদেশ থেকে চারা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজের বাড়ি বিজরা এলাকার পাশে বরুড়া উপজেলার ঘোষপা গ্রামে নার্সারি গড়ে তোলেন। নাম দেন বিজরা এন্টারপ্রাইজ। আবদুল মমিন বলেন, ২০২১ সালের জুনে সমুদ্রপথে প্রথম কাতারে গাছের চারা পাঠিয়েছেন। পরে বিমান পথে বিভিন্ন দফায় গাছের চারা যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে বছরে কোটি টাকার চারা যাবে।
চারার মধ্যে রয়েছে চায়না মাল্টা, পয়সা মাল্টা, আ¤্রপালি, থাই পেয়ারা, দেশি আমের চারা, গোলাপজাম, থাইজাম, কাউ, ডেউয়া ও নারিকেলের চারা প্রভৃতি। আবদুল মমিনের দেখাদেখি গত বছর থেকে গাছের চারা রপ্তানি শুরু করেন বিজরার পাশের বরুড়া উপজেলার গালিমপুরের আরেকটি নার্সারি-গ্রিন ওয়ার্ল্ড। মো. হানিফ, মো. সামছুল আলম, মো. রবিউল আলম ও খালেদুল ইসলাম নামের চার যুবক গ্রিন ওয়ার্ল্ড নার্সারি গড়ে তোলেন।
নার্সারিতে গিয়ে দেখা যায়, ফুল ফল ভেষজ ও কাঠের গাছের চারা। চারার গোড়ায় মাটি ব্যবহার করা হয় না। সেখানে কোকোপিট (নারিকেলের ছোবড়া) ব্যবহার করা হয়। নার্সারিতে রয়েছে গ্রিনহাউস। সেখানে গাছের শেকড় গজায় ও তাপমাত্রা সহনীয় হয়ে ওঠে। গ্রিন ওয়ার্ল্ড নার্সারির পরিচালক খালেদুল ইসলাম বাসসকে জানান, আবদুল মমিন আন্তরিক মানুষ। তার লাইসেন্স ব্যবহার করে ২০২২ সালের মার্চ মাসে সমুদ্র পথে আরব আমিরাত গেছে আমাদের নার্সারির সাড়ে চার হাজার গাছের চারা। সবই বিভিন্ন প্রকার আমের চারা। কুমিল্লা গাডের্নার্স সোসাইটির পরিচালক ডা. আবু নাইম বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিদেশে গাছের চারা রপ্তানি একটি ব্যতিক্রম আশা জাগনিয়া সুখবর। সেটি অব্যাহত থাকলে দেশের নার্সারি খাতে নতুন জাগরণ আসবে। বৈদেশিক মুদ্রায় দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে। সামাজিক বন বিভাগ কুমিল্লার বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বাসসকে বলেন, নার্সারি স্থাপনে আমরা পরামর্শ দিয়েছি। পাশাপাশি রপ্তানিতে ছাড়পত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও আমরা প্রয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করব।