চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে কোভিড ১৯সহ চোখ ওঠা, অ্যালার্জি কিংবা কনজেক্টিভাইটিস অন্যতম। আবার দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে কিংবা রাতে পরিপূর্ণ ঘুম না হলেও কিন্তু চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করতে পারে। তবে চোখ লাল হওয়ার পাশাপাশি ফুলে যাওয়া, চুলকানি কিংবা স্ফীত রক্তনালি দেখলে তা সহজভাবে নেবেন না। জেনে রাখুন ঠিক কী কী কারণে চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করে-
ভাইরাল কনজেক্টিভাইটিস: এটি একটি ভাইরাল সংক্রমণ, সাধারণত একে পিংক আিইজ বা গোলাপি চোখ বলা হয়। এটি কনজাংটিভার প্রদাহকে বোঝায়। এটি একটি পাতলা, পরিষ্কার ঝিল্লি যা চোখকে ঢেকে রাখে। আপনার যদি কনজেক্টিভাইটিস থাকে, তবে লালভাব ছাড়াও চোখে জ্বালাপোড়া, কাটার মতো অনুভূতি, পানি পড়া, চোখ ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আবার চোখ থেকে সাদা স্রাব বের হওয়া ও ফুলে যাওয়াও কিন্তু ভাইরাল কনজেক্টিভাইটিসের লক্ষণ।
কোভিড-১৯: কোভিড সংক্রমণ এখন পর্যন্ত তার বৃহৎ পরিসরের উপসর্গের জন্য সুপরিচিত, যদিও এটি প্রাথমিকভাবে ফুসফুসের সংক্রমণের সঙ্গে যুক্ত। কোভিডে সংক্রমিত হওয়ার বিভিন্ন লক্ষণগুলোর মধ্যে পিংক আইজ অন্যতম। এক্ষেত্রেও চোখ রক্তবর্ণ ধারণ করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনাভাইরাস চোখের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে, একইভাবে চোখের পেছন থেকে মস্তিষ্কে ভ্রমণ করতে মারাত্মক সংক্রমণ ঘটায়।
অ্যালার্জি: চোখ হঠা’ করেই লাল হওয়ার কারণ হতে পারে অ্যালার্জি। পরাগ, ধূলিকণা, পশুর চুল অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যার কারণে চোখ লাল হতে পারে। এর পাশাপাশি চোখে চুলকানি, জ্বালাপোড়াও অনুভব করতে পারেন অ্যালার্জির কারণে।
কন্টাক্ট লেন্স: কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহারের আগে ক্লিনজিং দ্রবণ দিয়ে সঠিকভাবে পরিষ্কার করতে হবে। আবার লেন্স পরার সময় হাত পরিষ্কার হওয়াও উচিত। এমনকি লেন্সগুলো যেন পুরোনো বা ভাঙা না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখুন। যদি এসব বিষয় মাথায় না রেখেই আপনি লেন্স ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে চোখের পৃষ্ঠে ঘর্ষণ সৃষ্টি হতে পারে ও সংক্রমণ ঘটতে পারে। গবেষকরা আরও দেখেছেন, লেন্সগুলো পুনঃব্যবহার করা, রাতে লেন্স পরে ঘুমানো কিংবা গোসল করার কারণে চোখে অ্যাকান্থামোইবা কেরাটাইটিসের (এ.কে) এর ঝুঁকি বাড়ে যা কর্নিয়ার সংক্রমণ। এই অবস্থায় পরজীবী অ্যাকান্থামোইবা কর্নিয়া ও কন্টাক্ট লেন্সের মধ্যে আটকে যায়। ফলে কর্নিয়ায় সংক্রমণ ঘটে ও তীব্র ব্যথা হয়। এ সংক্রমণের কারণে এক চতুর্থাংশ রোগীই অন্ধত্ববরণ করেন।
ড্রাই আইজ সিন্ড্রোম: ড্রাই আইজ বা শুষ্ক চোখের সিন্ড্রোম ঘটে যখন অশ্রু চোখকে সঠিকভাবে লুব্রিকেট করে না। ফলে চোখ শুষ্ক ও লাল হয়ে যায়। ওভার-দ্য-কাউন্টার চোখের ড্রপগুলো চোখের লুব্রিকেট তৈরি করতে পারে।
যদি আপনি ড্রাই আইজের সমস্যায় দীর্ঘদিন ভোগেন সেক্ষেত্রে দ্রুত চক্ষু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন। এসব কারণের পাশাপাশি স্বাভাবিক কারণেও মাঝে মধ্যে চোখ লাল হতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী চোখ লাল হওয়ার সমস্যা দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। সূত্র: টাইস অব ইন্ডিয়া