১৩দফা দাবীতে গজারিয়ার ভবেরচর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নদী-খাল ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির উদ্যোগে মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শনিবার (৮ অক্টোবর) বেলা ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এই মানব বন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। হোসেন্দি যেতে মেঘনা নদীর শাখা নদীতে অবৈধভাবে রাস্তা সরিয়ে ফেলা, থ্রি এ্যাংগেলের দখলকৃত দুটি খাল উদ্ধার করা, মেঘনার শাখা নদী, কাজলি নদী ও ফুলদী নদী ও খাল দখল মুক্ত করা এবং সকল কারখানায় ইটিপি স্থাপন করারও দাবী জানান মানব বন্ধনে অংশগ্রহণকারী বক্তারা।
মানববন্ধনে নদী খাল ও পরিবেশ রক্ষাকারী কমিটির সহ-সভাপতি ও গজারিয়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানব বন্ধনে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুম খান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিক ঢালী, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট শামীম ফরাজী, মহিলা বিষয়টি সম্পাদক জাহানারা বেগম সেফ প্রমুখ। মানব বন্ধনে গজারিয়া উপজেলা ও জেলার বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ এই মানব বন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন। নদী-খাল ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাসুম খান তার বক্তব্যে বলেন, নদীর ওপাড় দেশের খ্যাতনামা শিল্পপ্রতিষ্ঠান ফ্রেস, শ্যামলী প্রজেক্টসহ একাধিক কোম্পানি কাজলী নদী ও তীর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে। অন্যদিকে নদীর এই পাড় বসুন্ধরা টিস্যু পেপার মিলস, আধুনিক পেপার মিলসসহ বেশকিছু কোম্পানি পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি নদীতে বর্জ্য ফেলছে। একদিকে নদীটি সরু হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাছ শূন্য হয়ে পড়ছে নদীটি। এতে বেকার হয়ে পড়ছে এ ইউনিয়নের হাজারো জেলে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করে নদী দখলকারী ও নদী দূষণে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন মানব বন্ধনে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তারা। নদী-খাল ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মানব বন্ধন আয়োজনের সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, খালবিল দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পরছে। নদী ও খাল দখল করে নিচ্ছে একটার পর একটা। দখল আর দূষণে গজারিয়ার পরিবেশ দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় দূষণ আর দখলের কবলে পড়ে মরতে বসেছে কাজলী নদী, ফুলদী নদী, হোসেন্দির মেঘনার শাখা নদী, ভবেরচর বাজার থেকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত খাল। দখলকারীদের রাক্ষুসে থাবা থামানো না গেলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এক সময়ের খরস্রোতা ফুলদি নদী, হোসেন্দির মেঘনার শাখানদী ও কাজলী নদীসহ ছোট ছোট সকল খাল ও নদী। ভবেরচর বাজারের বেইলী ব্রিজ হয়ে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডের খালটি ইতোমধ্যে পুরোটাই গিলে খেয়েছে। নদী খাল ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি পরিবেশ রক্ষা করার জন্যই এই মানব বন্ধনের আয়োজন করে। বক্তারা আরো বলেন, থ্রি এঙ্গেল মেরিন লিমিটেডের মালিক ও সংশ্লিষ্ট ভূমি দস্যুরা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির নকল দলিল বানিয়ে ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক এসব জমি দখল করছে শিপ ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ। মাত্র ৩৭ একর ৮০০ শতাংশ জমি ক্রয় করে বর্তমানে তারা দখলে আছে প্রায় ১১০ একরেরও বেশি জমি। এর মধ্যে ব্যক্তি মালিকানাধীনের পাশাপাশি রয়েছে সরকারি খাস জমি, খাল, নদী, রাস্তা এবং ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্দকৃত জমি। এ দিকে থ্রি এঙ্গেল কোম্পানির অসঙ্গতির ব্যাপারে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় নদী খাল ও পরিবেশ রক্ষাকারী কমিটি হতাশ।