রাসূল সা: ছিলেন মিতব্যয়ী ও অল্পে তুষ্ট ব্যক্তি। হজরত আয়েশা রা: বলেন, রাসূল সা: যে বিছানায় নিদ্রা যেতেন তা ছিল চামড়ার, এর ভেতরে খেজুর গাছের আঁশ ভরা থাকত (শামায়েলে তিরমিজি-২৫৩)। মহানবী সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি মিতব্যয় করে, সে কখনো নিঃস্ব হয় না’ (মুসনাদে আহমাদ-৪২৬৯)।
হজরত আয়েশা রা: আরো বলেন, জীবদ্দশায় রাসূল সা: একই দিনে দু’বার রুটি ও জয়তুন দ্বারা পরিতৃপ্ত হননি (মুসলিম-২৯৭৪)।বিশ্বনবী সা: কোনো কাজে বাড়াবাড়ি কিংবা ছাড়াছাড়ি করতেন না; বরং মহানবী সা: সব কাজে মধ্যমপন্থা বজায় রাখার ওপর জোর তাগিদ দিয়েছেন। শারীরিক পরিশ্রমে, মস্তিষ্কের পরিচালনায়, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে, পানাহারে, ঘুম ও বিশ্রামে, দুঃখ-কষ্টে, হাসি-খুশিতে, আনন্দ-উল্লাসে ও ইবাদত-বন্দেগিতে, চলাফেরা ও কথাবার্তাসহ সার্বিক দিক থেকেই বাড়াবাড়ি-ছাড়াছাড়ি না করে মধ্যমপন্থা বজায় রেখে কাজ করাই হাদিসের নির্দেশনা ও মুমিনের অন্যতম গুণ।
হাদিসে এসেছে- রাসূল সা: বলেছেন, ‘সচ্ছল অবস্থায় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা কতই না সুন্দর! দারিদ্র্যের সময় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতই না ভালো! ইবাদত-বন্দেগিতে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা কতই না উত্তম’ (মুসনাদে বাযযার, কানজুল উম্মাল)! প্রিয় নবী সা: কত সুন্দর হেকমতপূর্ণ ভাষায় সংক্ষেপে উম্মতে মুহাম্মদিকে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের নসিহত পেশ করেছেন। সুতরাং মধ্যমপন্থায় সব কাজ সহজে সম্পাদনে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি এ দোয়া করা আমাদের কর্তব্য; তা হলো- ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে হেদায়েত কামনা করি, আপনার ভয় তথা পরহেজগারি কামনা করি, আপনার কাছে সুস্থতা তথা নৈতিক পবিত্রতা কামনা করি ও সম্পদ তথা সামর্থ্য কামনা করি (মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ ও মুসনাদে আহমদ)।
পবিত্র কুরআনে উম্মতে মুহাম্মদিকে মধ্যমপন্থী উম্মতের শ্রেষ্ঠত্ব ও গৌরব প্রদান করেছেন। আল কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে- ‘এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী উম্মত করেছি যাতে করে তোমরা মানবম-লীর জন্য সাক্ষ্যদাতা হও ও রাসূল তোমাদের জন্য সাক্ষ্যদাতা হন’ (সূরা বাকারাহ-১৪৩)। হজরত সাদ রা: রাসূল সা:-কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, অজুুতে কি অপচয় হয়? নবীজী বলেন, হ্যাঁ। প্রবহমান নদীতে বসেও যদি তুমি অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করো, তাও অপচয় (সুনানে ইবনে মাজাহ-৪২৫)। লেখক : প্রভাষক, গাজীপুর রউফিয়া কামিল মাদরাসা, অভয়নগর, যশোর