গত ৫ এপ্রিল রাত ৯টায়, ৯ মিনিট আলো নিবিয়ে মোমবাতি-টর্চ জ্বালানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চার মধ্যেই এ বার প্রাক্তন দুই রাষ্ট্রপতি ও প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করলেন তিনি। করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় তাঁদের পরামর্শ চেয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর। এর বাইরেও এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন মোদী। কথা হয়েছে কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও।
সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, আজ রবিবার প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং প্রতিভা পাতিলকে ফোন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। দেশে বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, চিকিৎসা পরিস্থিতি, লকডাউন-সহ যাবতীয় বিষয় নিয়ে দুই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর। পাশপাশি দেশে এই মারণ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের আরও কী কী করা উচিত, সে বিষয়ে দুই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরামর্শ ও মতামতও চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মনমোহন সিংহ এবং এইচ ডি দেবগৌড়া— দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও একই ভাবে কথা বলেছেন এবং মতামত চেয়েছেন মোদী।
শুক্রবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে দিন ৯ মুখ্যমন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন বৈঠকে। রবিবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজনৈতিক দলের প্রধানদের সঙ্গেও কথা বলেছেন মোদী। তালিকায় ছিলেন সনিয়া গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুলায়ম সিংহ যাদব, অখিলেশ যাদব, নবীন পট্টনায়ক, কে চন্দ্রশেখর রাও, এম কে স্তালিন, প্রকাশ সিংহ বাদলের মতো নেতারা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজ্যগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও নিয়ন্ত্রণ, লকডাউনের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশপাশি লকডাউনের পরে কী ভাবে এগনো হবে, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে একটি মহলের মত। ১৪ এপ্রিলের পরে পুরো লকডাউন তোলা হবে, নাকি ধাপে ধাপে তোলা হবে— সে বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। আবার ধাপে ধাপে তোলা হলে কোন কোন ক্ষেত্রকে ছাড় দেওয়া হতে পারে, তা নিয়েও রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে কথা হতে পারে প্রধানমন্ত্রীর।
দেশে আগেভাগে লকডাউন ঘোষণা করে প্রশংসা কুড়োলেও ব্যাপক হারে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ব্যবস্থা না করা, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর অভাব, চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা, মাস্ক-স্যানিটাইজারের অপ্রতুলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর এই ফোন-রাজনীতি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।