কাগজসহ সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের অযৌক্তিক ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন শাখা।
মিছিলোত্তর সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের শিক্ষাবিনাশী অপতৎপরতার সর্বশেষ সংযোজন শিক্ষা উপকরণের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। করোনা মহামারীর বিপর্যয়ের প্রভাব এখনো শিক্ষার্থী-অভিভাকরা কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এরই মধ্যে শিক্ষা উপকরণের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। গত পাঁচ-ছয় মাসের ব্যবধানে কাগজ, কলমসহ সব ধরনের শিক্ষা উপকরণের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু গত দুই সপ্তাহেই কাগজের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের যথাসময়ে বই হাতে পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, অস্বাভাবিক ব্যয় ও লুটপাটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তারা আরো বলেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় বইমেলায় লেখক, পাঠক, প্রকাশক-সর্বমহলের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। ফটোকপির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। কাগজসহ শিক্ষা উপকরণে সরবরাহ নিয়ে ব্যবসায়ী ও বিক্রেতারা গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যেই প্রকাশনা খাতে বিপর্যয় নেমে এসেছে। ক্রমাগত শিক্ষা উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা বেকায়দায় পড়ে গেছেন। মহাদুর্ভোগে পড়েছে চাকরি প্রত্যাশী ও নিজে খরচ চালানো শিক্ষার্থীরাও। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিরাট সংখ্যক শিক্ষার্থী; বিশেষকরে প্রান্তিক ও অনুন্নত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবিমুখ হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশিষ্টজনেরা। কিন্তু সরকার শিক্ষা উপকরণের দাম নিয়ন্ত্রণে সামান্যতম ব্যবস্থাও নিচ্ছে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এর আগেও করোনা মহামারীতে শিক্ষার্থীরা কঠিন সময় পার করেছে। কিন্তু সরকার শিক্ষার্থীদের সামান্যতম সহায়তা করেনি। এখনো শিক্ষার্থীদের কঠিন সময়ে রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। মনে হচ্ছে-সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা দেখতে বেশি আগ্রহী। কিন্তু এ জাতিবিনাশী নীরবতা মেনে নেয়া হবে না। অবিলম্বে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল স্তরে কালোবাজারি ও দুর্নীতি রোধে কার্যকর
ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা উপকরণের দাম কমিয়ে সহজলভ্য করে মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার ফি ও অন্যান্য খরচের সুনির্দিষ্ট সীমারেখা আরোপ করে দিতে হবে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খুলে দেয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকল ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; অন্যথায় সরকার নীরব থাকলেও ছাত্রসমাজ নীরব থাকবে না। নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হবে ছাত্রসমাজ।