পাকা ধান খেয়ে সাবাড় করল বন্য হাতির দল। পাহাড়িবাসীর চোখে মুখে হতাশার ছাপ। জেগে কাটছে রাত। হাতির সাথে যুদ্ধ চলছে প্রায় প্রতি রাতেই। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়া মাত্রই প্রস্তুতি নিতে থাকে তারা। এবারও বুঝি পাকাধান ঘরে উঠবে না অনেকের। এই দুশ্চিন্তার কোন সমাধান পাচ্ছে না পাহাড়ি জনপদের অসহায় মানুষগুলো। গত রাতেও কয়েকজন কৃষকের পাকাধান খেয়েছে হাতি। পাহাড়িবাসী জানায়, বন্যহাতির দল দিনে পালিয়ে থাকে পাহাড়ের জঙ্গলে। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে নেমে পড়ে আবাদী জমিতে। দলবেঁধে হাতি চলে আসে এসব জমিতে। হাতি প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া সোলার তার ধূমড়ে মুচরে চলে আসে তারা। হাতিরা সোলার তার সংলগ্ন গাছ উপড়ে ফেলে তারের উপর। তখন তার মাটিতে পড়ে থাকে। আর হাতি অনায়াসে চলে আসে তার পেরিয়ে। এই প্রতিরোধের সাথে পরিচিত হয়ে গেছে হাতি। তাই এটা কোনো সমস্যাই মনে করে না হাতি। স্থানীয় কৃষক ও পাহাড়িবাসী হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নানা কৌশল ব্যবহার করেন। পটকা ফাটিয়ে, বন বিভাগের দেওয়া মাইকে সাউন্ড করে, মশাল জ¦ালিয়ে, আগুন জ¦ালিয়ে, শব্দ করে, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, চার্জার লাইটের আলো দিয়ে, হৈ হুল্লুর করে হাতির দলকে প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেন। কোনো বাধাই আর মানে না বন্য হাতির দল। যে পর্যন্ত পেটে ক্ষুধা রয়েছে সে পর্যন্ত তারা ফসল খেয়ে হয় শান্ত ও ক্ষান্ত। হাতির আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে নির্ঘুম রাত কাটছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি সীমান্ত অঞ্চলের মানুষগুলোর। চলতি আমন আবাদের শুরু থেকেই হাতির নজর পড়ে ফসলের মাঠে। দফায় দফায় ফসলে আক্রমণ চালায় হাতি। সর্বশেষ যে টুকু ফসল ছিল মাঠে তাও শেষ করে দিচ্ছে বন্যহাতির দল। পাকাধান খেয়ে সর্বশান্ত করছে সীমান্তের কৃষকদের। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা এলাকায় আক্রমণ করে হাতির দল। এতে-বাবুল মিয়ার ২৫ শতক পাকা তুলশিমালা ধান, শাহজাহান মিয়ার ৬৫ শতক জমির পাকা ধান এবং মোস্তোফার ২৫ শতক জমির পাকা ধান খেয়ে শেষ করে দিয়েছে বন্যহাতির দল। এসব হাতি লোকালয়েও প্রবেশ করেছিল। সীমান্তবাসীর দাবি একটাই-‘হাতির আক্রমণ থেকে মুক্তি চান তারা।’