শস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার কৃষকরা ব্রি ধান ৯০ চাষ করে বাড়তি উৎপাদন ও আশাতীত দাম পেয়ে লাভবান হয়েছেন। ফলে এ ধান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চলতি বোরো মৌসুমে ৮০ ভাগ কৃষক ব্রি ধান ৯০ চাষের কথা জানিয়েছেন। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ব্রি ধান ৯০ তুলনামূলক কম সময়ে পেকে যায়। ফলে শরিষার আবাদ বেড়েছে। এই ধান চাষ করে ১ খেতে ৪ বার ফসলের চাষাবাদ হচ্ছে। দেশিগ্রাম ইউনিয়নের গুড়পিপুল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমি আমনের মৌসুমে ব্রি ধান ৯০ চাষ করেছিলাম। ৩ মাসের আগেই ধান পেকে গেছে। বিঘা প্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছে। ১ মণ ধান ২ হাজার থেকে ২২ ‘শ টাকায় বিক্রি করেছি। কৃষক সচিন মাহাতো, হায়দার আলী, জহুরুল ইসলাম, আব্দুল হামিদ প্রমূখ বলেন, আউশ ধান কাটার পড়ে ব্রি ধান ৯০ চাষ করা হয়। এরপর সময় মতো শরিষার আবাদ করা যায়। ধানের এ জাত আগাম হওয়ায় খেতে পানি ও সার কম লাগে। আমরা বোরো মৌসুমেও ব্রি ধান ৯০ চাষ করব। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ব্রি ধান ৯০ এ আধুনিক উচ্চফলনশীল ধানের সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ এ ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো দানার আকৃতি ব্রি ধান ৩৪ এর মতো হালকা ও সুগন্ধযুক্ত। এ জাতের পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১১০ সেন্টিমিটার। ধানে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৩ দশমিক ২ ভাগ, প্রাটিন ১০ দশমিক ৩ ভাগ। এ জাতের ১ হাজার পুষ্ট ধানের ওজন ১২ দশমিক ৭ গ্রাম। অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ধান গাছের কান্ড শক্ত, সহজে হেলে পড়ে না। ধান পাকার পরও গাছ সবুজ থাকে। এ ধান গাছের ডিগপাতা খাড়া। এ জাতের গড় জীবনকাল ১১৭ দিন। যা ব্রি ধান ৩৪ এর চেয়ে ২১ দিন আগাম। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, গত বছর আমনের মৌসুমে ব্রি ধান ৯০ চাষ হয়েছিলো মাত্র ৩৮০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বেড়ে সারে ৪ হাজার হেক্টর হয়েছে। ব্রি ধান ৯০ চাষ করার ফলে শরিষার আবাদ বেড়েছে গত বছরের তুলনায় ৩ হাজার ৫২০ হেক্টর। এই ধান তুলনামূলক প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহনশীলও বটে।