বরগুনার বামনা উপজেলা সদরে একমাত্র সরকারি সারওয়ারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে চলতি বছর ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে বয়সের বাঁধার কারণে অর্ধশত শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হয়েছে পড়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নতুন নীতিমালার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এসকল শিক্ষার্থীরা আদৌ কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে কিনা এনিয়েও অভিভাবকরা শঙ্কিত রয়েছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা সংশোধন করেন। শিক্ষার্থী ভর্তির সংশোধিত নীতিমালায়, ২য় শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য বয়স ৭ বছরের বেশি, ৩য় শ্রেণিতে ৮ বছরের বেশি, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ১১ বছরের বেশি ও ৭ম শ্রেণিতে ১২, ৮ম শ্রেণিতে ১৩ ও ৯ম শ্রেণিতে ভর্তির নূন্যতম বয়স ১৪ বছর নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। এর আগে, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বয়স জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি নির্ধারণ করা হয়েছিল। বামনা সরকারি সারওয়ারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ১২০ জন শিক্ষার্থী অত্র বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। চলতি বছর ১৩৪ জন ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করে। নীতিমালায় বয়সের বাঁধার কারণে সেখান থেকে মাত্র ৮৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি অর্ধশত শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পায়নি বিদ্যালয়টিতে। এ বিষয়ে অভিভাবকগণ জানায়, বয়সের বাঁধায় বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য ধারস্থ হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীর অভিভাবক স্বপন সাহা, মোঃ দুলাল মিয়া, শাহআলম জানান, তার সন্তান মাত্র ৪ মাসের কারণে ১১ বছর পূর্ণ হয়নি। তাকে ভর্তি করানো হয়নি। তিনি আরও জানান, যখন আবেদন পত্র পূরণ করে জমা দিয়েছে তখন কেন স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের বিষয়টি জানায় নি। পূর্বে জানানো হলে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে ভর্তি করানো সম্ভব ছিলো। এখন তার সন্তানকে কোথায়? কিভাবে ভর্তি করাবে এ নিয়ে বিপাকে ও দুশ্চিন্তায় পড়েছে সাধারন অভিভাবক। তবে অনেকেই মনে করেন বয়স ভিত্তিক জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে বা নীতিমালায় যেটা বলা হয়েছে সেটা অনেক আগেই প্রত্যেক বিদ্যালয়ে বাস্তবায়ন করা উচিৎ ছিলো। বামনা সরকারি সারওযারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, যাদেরকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি তারা যদি জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করে নিয়ে আসতে পারে তাহলে তাদেরকে অত্র বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বামনা সরকারি সারওযারজান পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি অন্তরা হালদার জনান, আমি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি করিয়েছি। জানি অনেক শিক্ষার্থীই বয়সের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সেখান থেকে অনুমতি পেলে ভর্তি নেওয়া হবে।