নীলফামারী জলঢাকায় সামাজিক বনায়ন কর্মসূচীর রোপনকৃত প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ কর্তন করা হয়েছে। অনুমতি বিহীন এসব গাছ কর্তন করে তা অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে একটি সিন্ডিকেট চক্রের বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে স্থানীয় ফরেষ্ট কর্তৃপক্ষ ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে ৭৪টি গাছের গোলাই জব্দ করে ইউনিয়ন তহশিলদারের সহায়তায় চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। সামাজিক বনায়নের আওতাধীন এ সকল গাছ অবৈধভাবে কর্তন করা হলেও এখন পর্যন্ত সেই সিন্ডিকেট চক্রের মুল হোতার খোঁজ পায়নি উপজেলা ফরেষ্ট কর্তৃপক্ষ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার গোলনা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড গণসংগঠন পাড়া গ্রামে। সরজমিনে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় ১ যুগ পূর্বে রোপনকৃত ইউক্যালেক্টরের এ গাছগুলো রাতের আধারে কেটে ফেলে সিন্ডিকেট চক্রটি এবং গত ২ জানুয়ারী (সোমবার)সকালে কোনরুপ অনুমতি ছাড়াই সমিতির লোকজন তড়িঘড়ি করে ভ্যান যোগে কালিগঞ্জ বাজারে অবস্থিত বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমানের এর ছোট ভাই জাহেদ হোসেন প্রিন্সিপাল এর ছমিলে এনে রাখেন কাঠ ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলামের তথ্যাবধায়নে। এ সময় গোপন সংবাদে পৌর ভূমি কর্মকর্তা সার্ভেয়ার তারেক রহমান বিষয়টি জানতে পেরে গোলনা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা জহুরুল হককে অবগত করেন পরে ভুমি কর্মকর্তা জহুরুল হক চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে ছমিল থেকে ৩৭টি গোলাই উদ্ধার করেন এবং ঘটনাস্থল থেকে ৩৭টি গোলাই জব্দ করেন। পরে উদ্ধারকৃত গাছের গোলাই গুলো গোলনা ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমানের নিকট হেফাজতে রাখেন।এ বিষয়ে গাছ ক্রেতা কাঠ ব্যবসায়ী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকার বাসিন্দা এবং ওই সংগঠনের সদস্য সাবেক মেম্বার মহিদুর রহমান, নিরঞ্জন রায় মাষ্টার, প্রনয় বাবু, সজল রায় ও ডাক্তার দিলীপ চন্দ্র রায় আমার কাছে বিক্রির উদ্দ্যশে গাছগুলো ছমিলে রেখে যায়। এ বিষয়ে গোলনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন, সার্ভেয়ার তারেক সাহেবের কথা মত গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই এবং তা জব্দ করি। গাছের গোলাইগুলো চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে এখন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।এ বিষয়ে গোলনা ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অবৈধভাবে গাছগুলো কর্তন করে ছমিলে রেখেছিল এসব জব্দ করা হয়েছে এবং আমার হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা ফরেষ্ট অফিসার জোবায়ের হোসেন চৌধুরী বলেন, অবৈধপন্থায় কর্তনকৃত ৩৮টি গাছের ৭৪টি গোলাই উদ্ধার করে চেয়ারম্যানের হেফাজতে রাখা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা যেনেছি মহিদুর রহমান নামের এক সাবেক ইউপি সদস্যের বিষয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মহিদুর রহমান বলেন, আমি ওই সমিতির একজন সদস্য আছি সত্যি। কিন্তূ গাছ কাটার বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই।এ ঘটনার বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন, ঘটনাটি যখনই আমি অবগত হয়েছি তৎক্ষণাৎ আমি স্থানীয় বন বিভাগ, পৌর ভুমি অফিসের সার্ভেয়ারকে নির্দেশ দিয়েছি গাছ উদ্ধার করার এবং ইউএনও ও এ্যাসিল্যান্ট মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আইননুসারে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। সরকারি গাছ অবৈধপন্থায় কর্তন করে কিছু লোক ফায়দা লুটে নিবে তা হবে না। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে কোন ছাড় হবে না। এতটুকু আপনাকে আশ্বস্ত করলাম। এ বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ভূমি জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, গাছগুলো এখনো জব্দ অবস্থায় আছে আমরা অপরাধী শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করবো।