নীল আকাশের নিচে জুড়ী উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে প্রকৃতির অলংকার হয়ে উঠেছে হলুদ সরিষার ফুল। চারদিকে তাকালে শুধু হলুদ আর হলুদ। ফুলের এই সমারোহ দু-চোখ জুড়িয়ে দেয়। দেশে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা আগ্রহ ভরে হাকালুকি হাওরে সরিষা চাষ করেছেন। ফলনও ভাল হওয়ার আশা করছেন। তবে সময় মত সেচ ও কীটনাশক দিতে না পারায় কিছু কিছু এলাকায় চারা গজানোর পর ১ ফুট লম্বা হয়ে ফুল এসে যাওয়ায় অনেকেই ফলন নিয়ে শঙ্কার মধ্যে আছেন। সরেজমিনে শনিবার ১৩ জানুয়ারি হাকালুকি হাওরে গেলে দিগন্ত জাড়া মাঠের পর মাঠ সরিষা ক্ষেত দেখা যায়, মাঠে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। মানসম্মত ও পরিক্ষিত বীজ, আধুনিক চাষাবাদ এবং বিজ্ঞানসম্মত পরামর্শ তেল জাতীয় এ ফসলের উৎপাদন ভাল হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে কৃষি বিভাগ। এ বছর সরিষা চাষ বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় রোপা আমন পরবর্তী সময়ে পতিত জমিতেগ সরিষা চাষ করা হয়েছে। সাধারণত রোপা আমন কাটার পর দুই থেকে আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। তারপর জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে বোরো মৌসুমে চারা রোপন করা হয়। এ সময়টিতে জমি অনাবাদি না রাখতেই সরিষার প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। বর্তমানে বাজারে কয়েক দফা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায় কৃষকরা সরিষা চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ১ হাজার ১৫০হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আবহাওয়ার অনুকূলে না থাকায় ৮শ ৫০হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলন শীল (উফশী) জাতের সরিষার চাষ করা হয়েছে। তবে এবারে অন্য বছরের তুলনায় আবাদ বেড়েছো॥ গত বছরে ৪শ ৯০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছিল। উপজেলা ৬টি ইউনিয়নে ২ হাজার কৃষকের মধ্যে প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১ কেজি সরিষার বীজ ও ১০কেজি ডিএপি ও ১০কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্ষায়ে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ জমিতে কৃষক উচ্চ ফলনশীল জাত হিসাবে পরিচিত বারি-১৪, ১৫, ১৭ এবং বিনা- ৪, ৯ বীজ বপণ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। এবারে সরিষা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। ফলনও ভালো হবে। তবে হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ার কারণে কিছু কিছু এলাকায় ফলন আশানুরূপ না হতে পারে।