ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে বরই। পরিপক্ব বরইগুলো দেখতে লাল ও সাদা আপেলের মতো। স্বাদেও বেশ মিষ্টি। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এ বরই গুলো থাই কুল, আপেল কুল, বল সুন্দরী নামে ও বেশ পরিচিত। এ বাগানটি নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার বলাগ্রাম ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড শালনগ্রামে অবস্থিত। মৃত মোঃ আমিন আলীর ছেলে সাব্বির হাসান তিনি তার নিজ হাতে নিজ জমিতে এ বরই বাগানটি করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের প্রতিটি গাছে দুলছে বরই। কিছু কিছু বরই গাছে বরই এর ভারে নুয়ে পড়ছে। পরে কথা হয় থাই কুল বড়ই বাগানের ম্যানেজার মৃত মীর আমিরুল ইসলামের ছেলে মীর মোকসেদুল হাসানের সাথে। এসময় আলাপকালে তিনি দৈনিক খবর পত্রকে বলেন, এ বাগানের মূল মালিক মোঃ সাব্বির হাসান। তিনি রংপুরে ব্যবসা করেন। ব্যবসায়িক কারণে তিনি এ বাগানে তেমন একটা সময় দিতে পারেন না। এজন্য থাই কুল বরই বাগানটি দেখাশোনা করার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এ বাগানের বয়স প্রায় এক যুগ। প্রাথমিক পর্যায়ে নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী এ বাগানের কার্যক্রম শুরু করা হয়। পরে ৭ বিঘা জমিতে ৩০০ থাই কুলের বরই চারা রোপণ করা হয়।এতে মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। লাগানোর ৮ থেকে ১০ মাসের মধ্যেই ফলন এসেছে।প্রতিবছর লোকজন তার বাগানে বরই কিনতে আসে। তিনি আশা করছেন এবছরও লোকজন আসবে বরই কিনতে। এবছর বরই এর বাম্পার ফলন হয়েছে। এখন বছরে প্রায় প্রতিটি বরই গাছ থেকে ২০-৩০ কেজি থাই কুল বরই পাওয়া যায়। যার প্রতি কেজি থাই কুল বড়ই এর খুচরা বাজার মূল্য ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে পাইকারাও আসেন থাই কুল বরই কিনতে। যার প্রতি মন পাইকারি বরই এর মূল্য ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। এছাড়া এ থাইকুল খেতে বেশ সুস্বাদু। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও রয়েছে। এবছর দাম ভালো পেলে সব খরচ বাদ দিয়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা লাভ থাকবে বলে জানান। পরে এবিষয়ে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ১০০ গ্রাম বরই খেলে ভিটামিন সি- এর ৭৭ শতাংশ ঘাটতি পূরণ হয়। এতে রয়েছে ভিটামিন এ ও বি কমপ্লেক্স। এতে আরও রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও ফসফরাস। এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন আহমেদ এর সাথে তিনি জানান, এ অঞ্চলের মাটি এবং আবহাওয়া দুটোই বরই চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। এছাড়া বরই চাষীদের উৎসাহিত করার জন্য সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান।