বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় আবার ও শীর্ষে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকা। গেল কয়েক মাসে বিশ্বের প্রথম চারটি দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায়ও রয়েছে ঢাকা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ২৭৯ নিয়ে রাজধানীর বাতাসের মান ‘ঝুঁকিপূর্ণ’। ১০১ থেকে ২০০ এর মধ্যে একিউআই স্কোরকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। আর ৩০১ থেকে ৪০০ এর এর মধ্যে থাকা একিউআইকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি ও চীনের উহান যথাক্রমে ২১২ ও ২০৩ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে, সেগুলো হল-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২,সিও,এসও২ এবং ওজোন (ও৩)। দীর্ঘদিন ধরে বায়ু দূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হল, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বর্তমানে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে নির্মাণকাজ, রাস্তার ধুলা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষিত কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে ঢাকা শহরের বাতাসের গুণমান দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮০ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৩ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাংক বলছে, দিনে ২টি সিগারেট খেলে মানবদেহের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিদিন সেই পরিমাণ ক্ষতির শিকার হন রাজধানীবাসী। এ ক্ষেত্রে নবজাতক থেকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ষাটোর্ধ্বরা রয়েছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দূষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকালমৃত্যু ঘটে।