সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার
রাজধানীর ধলপুরে ছিনতাই করার সময় এক ব্যক্তিকে খুন করে মো. আরিফ। এই মামলা থেকে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করে। অন্য মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে বাসায় ছিলেন। তবে শেষ রক্ষা হলো না তার। পুলিশ তাকে গার্মেন্টস কর্মী খলু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকায় গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত আরিফকে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে আরিফ (২২ জানুয়ারি) অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ভোরে যাত্রাবাড়ী থানার ধলপুর এলাকায় খলু মিয়াকে জখম করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তদন্তে নেমে ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, নিহতের কাছে প্রাপ্ত জিনিসপত্র ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে জানা যায় মৃত ব্যক্তি খলু মিয়া (২৮) ঢাকার নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকায় গার্মেন্টস কর্মী হিসাবে কাজ করতেন। ঘটনার দিন গাইবান্ধা থেকে সোনালী পরিবহনে খলু মিয়া রাতে যাত্রাবাড়ী থানা গোলাপবাগ পৌঁছায়। সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, গোলাপবাগ থেকে পায়ে হেঁটে ধলপুর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দিয়ে মায়ের দোয়া টায়ার অ্যান্ড ব্যাটারি শপের সামনে পৌঁছালে আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অজ্ঞাতনামা কতিপয় ছিনতাইকারী তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেফতারকৃত আরিফ ঘটনার সাথে জড়িত এবং একাধিক ছিনতাই মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি হওয়ায় সে দীর্ঘদিন ধরে তার নিজ বাসায় অবস্থান না করে পলাতক ছিলেন। কিন্তু অত্র মামলার ঘটনার পরপর পুলিশি তৎপরতা দেখে হত্যার ঘটনা থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য এবং হত্যা ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে ঘটনার পরদিন ওয়ারেন্ট মূলে গ্রেফতার হওয়ার উদ্দেশ্যে নিজের বাসায় অবস্থান করেন। ওইদিন রাতেই পুলিশ পূর্বের ওয়ারেন্ট মূলে আরিফকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে জেলহাজতে গিয়ে আরিফকে সনাক্ত পূর্বক তাকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ রিমান্ডে এনে আরিফকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করে যে, সে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ঘটনার দিন রাতে একটি ছুরিসহ ধলপুর নতুন রাস্তায় একটি ব্যাটারির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। খলু মিয়া রাস্তা দিয়ে আসার পথে তারা তার গলায় ছুরি ধরলে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। ঘটনার একপর্যায়ে তারা বুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে খলুর মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।