বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::

সরকার দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। জনগণের কথা বলার অধিকার নেই। নেই মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা। সরকার তার সামগ্রিক ব্যর্থতায় দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল সা: প্রদর্শিত একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান ইসলাম। শুধুমাত্র ইসলামই জনগণকে প্রকৃত নাগরিক অধিকারের নিশ্চয়তা দেয়। এমতাবস্থায় দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ইসলামের সুমহান আদর্শের ভিত্তিতে একটি ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) অনলাইন প্লাটফর্ম জুম ও ইউটিউবে অনুষ্ঠিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ। আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো: দেলাওয়ার হোসেন ও কামাল হোসাইন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
জামায়াতের সদস্যদের (রুকন) উদ্দেশ্যে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, নিজেদেরকে সত্যিকার মুসলিম হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কথা ও কাজের মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। রাসুলের সিরাত থেকে জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে সাহাবায়ে কেরামের মতো আন্দোলনে আরো অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রিয় বান্দা হওয়ার জন্য বিনয়ী হতে হবে। মানুষকে সম্মান করতে হবে। পরিবার ও সমাজে ব্যাপকভাবে সালামের প্রচলন ঘটাতে হবে। সবাইকে আগে সালাম দেওয়া অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। বিরোধী দল-মতসহ সকল মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। তিনি আরো বলেন, ইসলামি আন্দোলনের কাজে প্রতিযোগিতা করে অর্থ সম্পদ দান করতে হবে। নিজেদের সম্পদের একটি অংশ দ্বীনের জন্য অসিয়ত করে আখেরাতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। ‘জামায়াতের প্রত্যেক সদস্যকে (রোকন) ঋণমুক্ত জীবন-যাপন করতে হবে। আত্মীয় ও প্রতিবেশীর হক যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। মানুষের বিপদ-আপদে পাশে থেকে মানবতার সেবা করতে হবে। একইসাথে সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’
জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ে ১০ দফা ঘোষণার পর জুলুমের শিকার হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছেন। অবিলম্বে আমরা তার মুক্তির দাবি করছি। রাজনৈতিক যেকোনো নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনে বাধা প্রদান, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশের বর্বরোচিত নির্যাতন ও হাত-পা ভেঙে ফেলার ঘটনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালানো তাদের কাজ নয়। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে অমানবিক আচরণ পরিহার করে সংবিধানের আলোকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ সাবেক এ সংসদ সদস্য আরো বলেন, জামায়াত সব সময় জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল। জেল-জুলুম, মামলা-হামলা, নির্যাতন ও হত্যার ভয় দেখিয়ে জামায়াতকে দমিয়ে রাখা যাবে না। একইসাথে জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকেও দমানো যাবে না। তিনি নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই জুলুমবাজ সরকারকে বিদায় জানাতে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, পূর্ণাঙ্গ ইসলামি আন্দোলন হিসেবে আল্লাহর জমিনে তাঁরই দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টায় জামায়াতের রুকনদের বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে হবে। জামায়াতের সর্বস্তরের জনশক্তিদের মজবুত ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে জাহেলিয়াতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য ইলমি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। আল্লাহর গোলাম হিসেবে জান্নাতের প্রত্যাশায় আমলি-জিন্দেগি উন্নততর করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আমরা আল্লাহর দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করছি। এ কাজ করেছিলেন আল্লাহ তাআলার প্রেরিত নবী-রাসূলগণ। এ দায়িত্ব আমাদের সুসংগঠিত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে পালন করতে হবে। বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুধাবন করে দেশে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করতে হবে। ভৌগোলিক পরিম-ল ও পাশের দেশের পরিকল্পনা বুঝে দেশের ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অটুট রাখার স্বার্থে যৌক্তিক বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতের সকল জনশক্তিকে দাওয়াতি কাজ বাড়াতে হবে। তালিমুল কুরআনের মাধ্যমে সমাজের সকল মানুষের কাছে কোরআনের শিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরো তৎপর হতে হবে। নিয়মিত অধ্যয়নের মাধ্যমে জ্ঞানার্জন ও অন্তরের খোরাক যোগাতে হবে। সমাজের সকল পর্যায়ে সৎ, যোগ্য ও দক্ষ লোক তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জামায়াত কর্মী মানেই সমাজ কর্মী। তাই সামাজিক কাজের মাধ্যমে মানুষের ঘরে ঘরে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। সামাজিক নেতৃত্ব তৈরি করতে হবে। সার্বিকভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সাহায্য কামনা করতে হবে। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। তেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস উঠছে। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার হরণ করা হয়েছে। এই ক্রান্তিকালে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে আন্দোলন সংগ্রামে জামায়াতের রুকনদেরকে সম্মুখে থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, ব্যক্তিগত পরিকল্পনার আলোকে টার্গেট নির্ধারণ করে পরিকল্পিত জীবন অতিবাহিত করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা) ও সাহাবী আজমাইনের মতো পরিকল্পিত ও টার্গেটভিত্তিক ইসলামের আদর্শিক দাওয়াত সবার কাছে পৌঁছাতে হবে। প্রত্যেকের মনোজগতে চিন্তার বিপ্লব সৃষ্টি করতে হবে। ইখলাস ও সালাতের মাধ্যমে নিজের আমলের পরিশুদ্ধতা আনতে হবে। জামায়াতের সদস্য (রোকন) হিসেবে সমাজের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করতে হবে। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com