ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় থামছে অবাধে মাটি কাটার মহোৎসব। মাটি মাফিয়াদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ফসলি উর্বর জমি, উঁচু ভিটা, এমনকি ক্ষুদ্র জলাশয় কোন কিছুই বাদ পড়ছে না। তিন ফসলী কৃষি জমি পরিনত হচ্ছে পুকুর-ডোবায়। দিন দিন ফসলের উৎপাদন কমছে, বেকার হচ্ছে কৃষক, পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। মাটি কেটে বানানো হচ্ছে গভীর পুকুর। এর ফলে একদিকে যেমন এলাকার উর্বর আবাদি জমির পরিমান কমছে অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে বসতবাড়ি। মাটি পরিবহনে ভারী ট্রাক ও মাহে›ন্দ্র ট্রলি ব্যবহারে ইউনিয়ন ও গ্রামীণ সড়ক হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থ ঘটছে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা। মাটি খেকো সিন্ডিকেটরা জানিয়েছে, উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও সরকারি আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবাদি জমির শ্রেনি পরিবর্তন করে পুকুর খননের মহোৎসবে মেতেছে মাটি মাফিয়ারা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া, পান্তাপাড়া, যাদবপুর, কাজীরবেড়, নাটিমা, মান্দারবাড়িয়া, শ্যামকুড়, আজমপুর, এসবিকে ও পৌর এলাকায় বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা জিন্টু, দ্বারিয়াপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে মখলেচুর রহমান, খালিশপুর বাজারের ফিরোজ, কাগমারি ও ঘুগরী গ্রামের মুন্তাজ ও সুমনের নেতৃত্বে চলছে অবাধে মাটি কাটার মহোৎসব। এছাড়াও প্রায় অর্ধশত এলাকায় অবৈধভাবে পুকুর খনন করছে মাটি খেকোরা। ঘুগরী গ্রামের সুমন জানায়, আমরা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী গোলামকে মোস্তফাকে ম্যানেজ করে মাটি বিক্রি করছি। এ ব্যাপারে গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি ইউএনও অফিসে পুকুর সংস্কারের রিপোর্ট দিয়েছি তবে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে কিনা তা আমার জানা নেই। দ্বারিয়াপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মখলেচুর রহমান দম্ভোক্তি করে বলেন, আমি মাটি কেটে বিক্রি করছি প্রশানের কোন কিছু করার থাকলে করুক। আজমপুর ইউনিয়নের দো-বিলা বিলটি মাছ চাষের জন্য সরকারের কাছ থেকে একটি সমিতি লিজ নিয়ে একটি সিন্ডিকেটের যোগ-সাজসে বালি এবং মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করলেও এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বাথানগাছি গ্রামের খাইরুল ইসলাম জানান, মাটি বহনের ট্রাক্টরের কারণে তাদের এলাকায় দূর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিষয়টি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী শফি উদ্দিনকে জানালেও কর্ণপাত করছেন না। কৃষক মাজেদ আলী জানান, দ্রুত মাটিকাটা ও বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে। এজন্য তিনি প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে মহেশপুর পৌর ফাঁড়ির ট্রাফিক সার্জেন্ট খাইরুলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আমি যশোর আছি এসে ব্যবস্থা নেবো। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার রাজবংশী জানান, সোমবার সকালে মাটির গাড়ি উপজেলা বাইপাস সড়কে আটকে চাকার হাওয়া ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এক ঘন্টা পরে ওই গাড়িগুলি আবার মাটি ব্যবসায়ীরা নিয়ে চলে যায়। এলাকাবাসী দূর্ঘটনা এড়াতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।