প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এর এজেন্ডাগুলোকে অষ্টম প ম বার্ষিক পরিকল্পনা এবং ২০২১-২০৪১ সাল পর্যন্ত পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনার লক্ষ্য গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ বেলজিয়ামের রানী এবং জাতিসংঘের এসডিজি বিষয়ক বিশেষ দূত ম্যাথিল্ড ম্যারি ক্রিস্টিনের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধের কারণে গোটা বিশ্ব অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে এবং মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত কারণ, যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে।’ সফররত বেলজিয়ামের রানী বিভিন্ন খাতে বিশেষকরে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী ও শিশুর উন্নয়ন এবং নারী শিক্ষায় বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন। রানী বলেন, ‘আমি আপনাদের অগ্রগতি দেখে খুব খুশি।’
শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাকরির বাজারে বিপুল সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষ করে আইসিটি বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এখন হচ্ছে ডিজিটাল যুগ, তাই তোমাদের এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। তোমরা যদি তা করতে পার তবে চাকরির বাজারে আরো সুযোগ পাবে।’
শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল যুগের জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হতে অবসর সময়ে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, বিশেষ করে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘শুধু ব্যাচেলর বা মাস্টার্সই যথেষ্ট হবে না; দেশে ও বিদেশে চাকরির সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য তোমাদের যেকোনো বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান প্রয়োজন।’ তিনি শিক্ষার্থীদের তাদের সময় নষ্ট না করার এবং সরকার সারাদেশে যে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে তা গ্রহণ করার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও কর্তৃপক্ষকে গবেষণায় আরো মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘কৃষি নিয়ে আমাদের গবেষণা কাজ ভালোই চলছে। আমি তোমাদেরকে অন্যান্য বিষয়ে আরো মনোযোগ দিতে বলব।’ তিনি বলেন, গবেষণা ছাড়া সর্বশেষ উন্নয়ন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষিত জাতি ছাড়া কোনো দেশ উন্নত হতে পারে না। আমরা দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ চাই এবং এর জন্য আমাদের জরুরিভাবে শিক্ষিত জনবল প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার শিক্ষাকে বৈচিত্র্য্যময় করেছে। আমরা শিক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি যাতে আমাদের শিশুরা ক্রমাগত উন্নয়নশীল বিশ্বের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। আমরা প্রতিটি জেলায় উচ্চশিক্ষা লাভের সুযোগ করে দিচ্ছি। এতে কর্মসংস্থানও নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, সরকার বিষয়ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে, যেগুলোকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তিনি করোনাভাইরাস মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার সময় পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।