দ্রব্যমূল্য ও মানুষের জীবনযাত্রা একই সূত্রে গাথা। প্রতিটি পরিবারে কিভাবে দৈনন্দিন জীবন-জীবীকা নির্বাহ করবে তা নির্ভর করে তার আয়,ব্যায় ও চাহিদার উপর।নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যখন ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে তখন মানুষের মাঝে স্বস্তি ও শান্তি থাকে।কিন্তু নিত্যপন্য যখন ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে যায়, তখন মানুষের মধ্যে নেমে আসে নানান অসুবিধা। দেশে প্রতিনিয়ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূলের দাম ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। তারই মধ্যে এবার এক লাফে দামে ইতিহাস গড়ল ‘সস্তা মাংস’ ব্রয়লার মুরগি। স্বল্প আয়ের মানুষের একমাত্র ভরসা এবং মাংসের চাহিদা মেটানোর প্রধান উৎস ছিল ‘সস্তা মাংস’ ব্রয়লার মুরগি। বাজারে অন্যান্য মাংসের তুলনায় অনেকটা কম দামেই পাওয়া যেত ব্রয়লার মুরগি। কিন্তু এখন এক লাফে ২১০ থেকে ২২০ টাকা হয়েছে এর এর দাম। তাতে ব্রয়লার মুরগির দাম হঠাৎ বাড়লো ৬০ থেকে ৭০ টাকা। গত কয়েকদিন আগেও ব্রয়লার কেজি ছিল ১৫০ টাকা। সরেজমিনে সোমবার উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়,ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২১০ থেকে ২২০ টাকা দামে। যা গত একসপ্তাহ আগে ছিলো ১৫০ টাকা আর ৪ সপ্তাহ আগে ছিল ১২০ টাকা করে। একই হারে বাড়ছে সোনালি মুরগির দামও। গতকাল প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়। বেড়েছে লেয়ার অন মুরগির দামও বর্তমানে প্রতি কেজি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়। যা গত কয়েক সপ্তাহ আগে বিক্রি হত ২০০ টাকায়। বেড়েছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়। কিন্তু হালি কিনলে দাম নেওয়া হচ্ছে ৪৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এর আগে কখনো ২২০ টাকার বেশি দামে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করতে হয়নি। মূলত বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কমার কারণেই দাম বাড়ছে। ভোক্তারা বলছেন, দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আসন্ন রমজানে গিয়ে আরো দাম বাড়বে, তাঁদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে ব্রয়লার মুরগিও। উপজেলার কয়েকজন মুরগি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, পোলট্রি খাদ্য, বাচ্চা, ওষুধসহ সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। তাই ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় মুরগি কিনতে আসা পৌরসভার রিক্সা চালক জলিল মিয়ার(২০) সাথে, হামা দিন আনোং দিনোত খাং প্রতিদিন রিক্সা চালিয়ে ৩৫০-৪৫০ টাকা আয় হয়। এক পিচ ব্রয়লার মুরগির নিলে বর্তমানে কমপক্ষে ৩১০-৩২০ টাকা লাগে বাকি খরচত আছে। এতে সংসার চালানো বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। পারটেক্স বোর্ড মিস্ত্রি দুলাল চন্দ্র রায়(৩০) বলেন, আমার পরিবারের সদস্য পাঁচজন প্রতিদিন কাজ করে মজুরি পাই ৪০০ টাকা। এ টাকায় নিজের সংসার ঠিকমতো চালাতে পারিনা আর বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির যে দাম কবে যে কিনেছি তা বলতে পারিনা।এবিষয়ে কথা হয় উপজেলার বেশ কিছু নানা শ্রেনীর সাধারণ মানুষের সাথে তারা জানান, আয় বাড়ছে না কিন্তু ব্যায় বাড়ছে দেদারছে। সকল জিনিসের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলছে, নেই নিয়ন্ত্রণ। এমন পরিস্থিতিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। অনেকেরই মাসের রোজগার দিয়ে পরিবার চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে তাছাড়া অনেকেই পরিবারের চাহিদা মেটাতে চলে যাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।এভাবেই পরিবারের চাহিদা মেটাতে দৌড়ের উপর রয়েছে সল্প আয়ের শ্রেণির মানুষজন।