সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের অনেকেই হাঁস পালন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। বিশেষ করে, কম পুঁজি বিনোয়োগে হাঁসের খামার করে সচ্ছলতা ফিরেছে তাদের সংসারে। এ কারণে হাঁস পালনে আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশে ৩০০ বেশী হাঁসের খামার রয়েছে। সেসব খামারে ৪ লক্ষাধিক হাঁস আছে। পৌর এলাকার আসান বাড়ী গ্রামের নাছিমা খাতুন নামে একজন বিধবা নারী বলেন, তাদের ভূমিহীন পরিবার। স্বামী ও তিনি কৃষি শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেন। কিন্তু তার স্বামী মারা যাওয়ার পর একার রোজগারে এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তারপর তার বড় ছেলে বাবুকে সাথে নিয়ে হাঁস পালন শুরু করেন। এখন ৪০৭ টি হাঁস রয়েছে। হাঁসগুলো বর্তমানে ২৮০ থেকে ৩০০ টির মতো ডিম দিচ্ছে। দামও ভালো। ডিমের টাকায় কয়েক বিঘা কৃষি জমি বন্ধক রেখেছেন। নিজেরাই সেই জমিতে চাষাবাদ করেন। এখন তার সংসারে কোনো অভাব নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোর বেলাতে হাঁসের খামার থেকে ডিম তুলছেন নাছিমা খাতুন। তারপর হাঁসগুলো খাওয়ানোর জন্য খালের মধ্যে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে কহিত গ্রামের রুহুল আমীন বলেন, আমি ৩০ বছর ধরে হাঁস পালন করছি। কখনও লোকসান হয়নি। তাড়াশ বিল এলাকা হওয়ায় হাঁস পালন বেশ লাভজনক। বর্ষা মৌসুমে শামুক, ঝিনুক, শ্যাওলা ও লতাপাতা খেতে পায়। শুষ্ক মৌসুমে জমিতে পড়ে থাকা ধান খায়। বাড়তি খাবার তেমন লাগেনা। এসব সুবিধার জন্য হাঁস পালনে আগ্রহ বাড়ছে প্রান্তিক মানুষের মধ্যে। সগুনা ইউনিয়নের মাকড়শন গ্রামের জয়নাল আবেদীন লাবু বলেন, তিনি নয় বছর ধরে চাষাবাদের পাশাপাশি হাঁস পালন করে আসছেন। বছরে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বাড়তি আয় হচ্ছে হাঁস পালন করেই। এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শফিউল আলম দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, পাঠ পর্যায়ে খামারিদের ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়ে থাকে। এজন্য হাঁসের রোগব্যাধি হয়না বললেই চলে।