৬টি নদনদী বেষ্টিত রৌমারী উপজেলা। বর্ষা বন্যার সময় নদীর পার উপচে ভরে যায় সর্বস্ব্য উপজেলা। আজ শুকনা মৌসুমে ব্রম্মপুত্র ও হলহলিয়া নদের ধু-ধু বালুচরে গম, তিল, পিয়াজ গুয়ামুড়ি, ইরি বোরো ধানসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নদী ভাঙনে নিস্বঃ চাষিরা। চাষ করতে জানলে বালু চরেও সোনা ফলানো যায়। তা প্রমান করেছেন চাষিরা। এ যেন তাক লাগানো বিশ্বয়কর ঘটনা। বর্ষা কালে ব্রম্মপুত্র, হলহলিয়া সোনাভরি জিঞ্জিরাম, কালাপানি ও ধর্নী নদীর খর¯্রােতে উপজেলার সকল ইলাকা প্লাবিত হয়ে মানুষের চলাচলে কোন সুযোগ থাকে না। নষ্ট করে দেয় বিভিন্ন ফসল, ভেঙ্গে যায় নদের পার, ঘরবাড়ি, জমিজিরাত। বর্ষার বিদায় বেলায় সেই খর¯্রােত নদী হেমন্তেই নদের বুকে জেগে উঠে অসংখ্য ধু-ধু বালুচর। এ হেমন্তই বন্যা আর নদী ভাঙ্গনে সম্পদ হারা চরাঞ্চলের মানুষ জীবন জীবিকার তাগিদে জেগে উঠা বালুচরেই ফসল বুনেন। পেটে দু’ঠো ভাত জোগাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালুচরে বিভিন্ন ফসলের চাষ করেন নদী পাড়ের মানুষ। তবে চরাঞ্চলের জমিতে বেশির ভাগ খিরা, তরমুজ, বাদাম হলেও বর্তমানে গম, পিয়াজ, ইরি বোরো ও ভূট্রার মতো ফসল ফলাতেও সক্ষম হচ্ছেন কৃষকরা। চরাঞ্চলে ফসল ফলাতে খরচ কম। তাতে চাষিরা লাভবানও হয়। চাষিরা জানান, বালুচরে সামান্য চাষ দিয়ে ও অল্প পরিমানে সার প্রয়োগের মাধ্যমে বীজ বপন করা যায়। গাছ হওয়ার পরে একটু পানির সেচ দিতে পারলে ফসলের চেহারা হয়ে যায় দেখার মতো। বর্ষার আগেই বেশীর ভাগ ফসল বাড়িতে নেয়া যায়। মরিচ, তিল, কাউন, পাটসহ এমন জাতের কিছু ফসল অগ্রীম বর্ষায় তলিয়ে যায়। এতে তাড়াহুড়া করে কিছু ফসল উদ্ধার সম্ভব হয়। তাতেও আমরা আল্লাহর রহমতে কম খরচে চরাঞ্চলে ফসল ফলিয়ে ভালোই আছি। ফুলকারচর এলাকার কৃষক আমির হোসেন বলেন, নদীতে সব জমি ভেঙ্গে গেছে। এক টুকরো জমিও আমার নেই। অন্যের বালুচরে ১৫ কাঠা জমি বরগা নিয়ে গম বুনেছি। দুর থেকে পাইপ দিয়ে পানির সেচ দিয়েছি। তাতে অল্প খরচে ভালো ফসল পাবো বলে মনে হচ্ছে। পরিত্যাক্ত এসব বালুচরে যদি আগাম বন্যা না আসে, তাতে মরিচ, তিল, কাউন, পাট জাতের মতো ফসল গুলিও সুন্দর ভাবে আনা সম্ভব হবে।