যাত্রী সেজে বাসে উঠে প্রথমে ড্রাইভার-হেলপারকে পণবন্দি করে, এরপর অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে লুটে নেয় সব কিছু। এমন আন্ত: জেলা ডাকাতদলের ৬ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ( ডিবি)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফখরুল কবির শান্ত, মো. মনির হোসেন, মো. ইমরান, মো. মুজাহিদ ওরফে বাবু, মো. রাজিব ওরফে আসিফ এবং মো. সানি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ ৩টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল শনিবার (৪ মার্চ) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদ।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (৩ মার্চ) মিরপুর-গাবতলী ও সাভারের গেন্ডা-রাজপুরে অভিযান চালিয়ে ডাকাতির সাথে সম্পৃক্ত এই ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা পরস্পরের যোগসাজশে যাত্রী সেজে বাসে উঠে বাসের ড্রাইভার-হেলপারকে জিম্মি করে বাসের মধ্যে ডাকাতি সম্পন্ন করে। নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে বিভিন্ন স্থান থেকে একজন করে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। এদের বিরুদ্ধে দারুসসালাম থানায় ডাকাতি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপিসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র-মাদক মামলা রয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, ১২ ফেব্রুয়ারি রিসাত পরিবহনের একটি বাস যাত্রীসহ খুলনার সোনাডাঙ্গা থেকে ছেড়ে সুপারভাইজার-হেলপারসহ বিকেলে গাজীপুরের শিববাড়ী পৌঁছায়। সেখান থেকে পরবর্তী ট্রিপের জন্য গাজীপুর হয়ে নবীনগর যায়। নবীনগর বাস কাউন্টারে পর্যাপ্ত যাত্রী না থাকায় বাসটি দারুসসালাম থানার পর্বত সিনেমা হলের ডানপাশে রাস্তার উপরে রেখে বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার ভেতর থেকে দরজা লক করে বাসের পেছনের সিটে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন রাত সাড়ে ১২ টায় ৮-১০ জনের একটি ডাকাত দল গাড়ির ভেতরে ঢুকে এ স্থানে গাড়ি পার্কিংয়ের কারণ জানতে চায়। ডাকাতদের কথায় বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজার বশ্যতা স্বীকার করলে ডাকাতদল খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। তখন ডাকাত দলের নেতা গ্রেপ্তারকৃত শান্তর নেতৃত্বে সুমন-মনির বাসের ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজারের কাছে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন চায়। দিতে অস্বীকার করলে তাদেরকে রড-হুইলরেঞ্জ-পাইপ দিয়ে মারধর করে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এরপর ড্রাইভার-হেলপার-সুপারভাইজারের চোখ ও হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে পেছনের সিটে ফেলে রাখে। দলনেতা শান্ত গাড়ি চালিয়ে কিছুদূর এসে ডাকাত দলের অন্য সদস্য ইমরানকে গাড়ি চালাতে বলে। পরবর্তীতে ডাকাত দলের কয়েকজন নিজেরাই যাত্রী-হেলপার-সুপারভাইজার সেজে গাবতলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-আজিমপুর-যাত্রাবাড়ী-কাচপুর হয়ে একই পথে এসে আমিনবাজার-সাভার-চন্দ্রা’র বিভিন্ন স্থান থেকে একজন একজন করে লোক তুলে মারধর করে তাদের সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তাদের চোখ ও পিছমোড়া করে হাত বেঁধে বাসের পেছনে ফেলে রাখে। ডাকাতদল সারারাত ধরে ডাকাতি করে ভোরের দিকে আহত যাত্রীসহ বাসটি সাভার থানার কবিরপুরে রাস্তার পাশে ফেলে চলে যায়।