বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
সদরপুরে তিল চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এ সোহাগ মার্জিত স্বভাবের কারণে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে টেংগারচর ইউনিয়ন পরিষদের সর্বজনীন পেনশন স্কিম কার্যক্রম উদ্বোধন ফরিদপুরে স্থায়ী প্রশস্ত ব্রিজের দাবীতে মানববন্ধন রামগতিতে হরিনাম মহাযজ্ঞে সরকারি কর্মকর্তা-জনপ্রতিনিধিদের মিলনমেলা কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী অবস্থান প্রেমের ফাঁদে ফেলে জোরপূর্বক অন্তরঙ্গ ছবি তুলে ভাইরাল করানোর ভয় দেখিয়ে টাকা নিতো মেঘলা শিশুদের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা শীর্ষক সভা শ্রীমঙ্গলে আগাম জাতের আনারসের বাম্পার ফলন, ন্যায্য দাম পেয়ে খুশি চাষিরা ধনবাড়ীতে ৬ ওষুধ ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

ফরিদগঞ্জে সূর্যমুখী চাষে সফলতা পেয়েছেন মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী

এমরান হোসেন লিটন (ফরিদগঞ্জ) চাঁদপুর :
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০২৩

সূর্যমুখী চাষে আশার আলো দেখছেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চাষীরা। দিন দিন বাড়ছে এর চাহিদা। কৃষি বিভাগ মনে করছে, সূর্যমুখী চাষে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি পূরণ হবে তেলের চাহিদা। বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারিভাবে পরীক্ষামূলক শুরু হলেও এখন অনেক কৃষক বাণিজ্যিক ও নিজ উদ্যোগে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। এমনই একজন চাষী ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০ নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চররাঘবরায় গ্রামের মোশাররফ পাটওয়ারী। সরকারের প্রণোদনা হিসেবে গত বছর ১৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের বীজ দিয়ে তিনি চাষ শুরু করেন। সাফল্য পাওয়ায় এবার কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবং নিজ উদ্যোগে প্রায় ৭০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসছেন শত শত মানুষ। সূর্যমুখী চাষী মোশাররফ বলেন, তিনি একজন সিজনালী ব্যবসায়ী। কখনও সুপারী, কখনও নারিকেল এবং আরও কিছু কাঁচা পর্ন কিনে ব্যবসা করেন। তার পাশাপাশি তিনি অটোরিকশা ও চালাতেন। হঠাৎ গত বছরের একদিন ইউনিয়নের সাবেক উপসহকারী কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম তার অট দিয়ে যাওয়ার পথে তাকে সূর্যমুখী ফুল চাষে পরামর্শ দেন। এবং সে বছর তার পরামর্শে মোশাররফ উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ১৫ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন। গত বছর নতুন অবস্থায় মোশাররফের যা খরচ হয়েছে তার চেয়ে অনেক বেশি লাভ হয়েছেন বলে তিনি জানান। সূর্যমুখী চাষে অনেক বেশি লাভ তাই এবছর তিনি ৭০ শতাংশ জমিতে এ চাষ করেছেন। এ বছর এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। তিনি আশা করছেন এ বছর তার ১ লাখ বা ১ লাখ টাকার বেশি বিক্রি আসবে। তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী ফলন সরিষার থেকে তিন-চারগুণ বেশি হয়, কিন্তু খরচ প্রায় সমান হয়। সূর্যমূখীর ফলন আসতে সাড়ে তিন মাস সময় লাগে এবং দুইবার সেচ দিতে হয়। এবং বাজারে বিক্রি করতে যেতে হয় না। বাড়ি থেকে এসে ক্রেতারা নিয়ে যায়। সূর্যমুখী চাষে একদিকে তেলের চাহিদা পূরণ হবে। অন্যদিকে সৌন্দর্য বাড়ছে। তিনি আরও বলেন তার বাগানে সূর্যমুখীর সেরা ফলন এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে দেখতে আসছে উৎসক জনতা। এসে তারা বিভিন্নভাবে সেলফি ও ছবি তুলছে। মোশারফ বলেন, আগামী বছর আরও বড় পরিসরে করার চিন্তা ভাবনা তার আছে। তিনি বেকার যুবকদের উদ্দেশ্য বলেন, তারা ঘরে বসে না থেকে সূর্যমুখীর চাষ করলে অনেক লাভবান হবেন। তেলের চাহিদাও পূরণ হবে। উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে সব ধরণের সহযোগিতা করছে। অনেক কৃষক আমার কাছে এসে বিভিন্ন রকম পরামর্শ নিচ্ছেন। এ সময় অন্য আরেকজন চাষি লুৎফুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, আমরা দুজনেই আর ডি এস ২৭৫ জাতের হাইব্রিড সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। আমাদের ফলন খুব ভালো হয়েছে। আমাদের এক একটি গাছের উচ্চতা ৬ ফুট থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত। গাছের উচ্চতা হিসেবে ফলনও হয়েছে খুব ভালো। ফরিদগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর দু’শত ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অর্জন করা হয় ৩ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় ২ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ হয়। যে আবাদ হয়েছে তা থেকে ৫ টন সূর্যমুখীর বীজ পাওয়া যাবে। উপজেলায় এ বছর ৭০ জন কৃষককে সূর্যমুখীর এক কেজি করে বীজ দেওয়া হয়। এবং ডিএপি ও এওপি সার প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় বিতরণ করা হয়েছে। ১০নং গোবিন্দপুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ্র দাস বলেন, তার ইউনিয়নে আরো কয়েকটি সূর্যমুখী চাষের প্রজেক্ট রয়েছে। তাদের সহযোগিতায় চাষিরা খুবই উদ্বুদ্ধ এবং খুশি। কৃষকদের জন্য সরকারি সহযোগিতার কোনো রকম ঘাটতি তারা রাখেন না। সূর্যমুখীর এক লিটার তেলের দাম ৭শত টাকার মত। তরকারি পাক করতে সয়াবিন তেল যেটুকু প্রয়োজন হয়, সূর্যমুখী ফুলের তেল দিয়ে তার অনেক অনেক কম হলেই তরকারি দারুন টেস্ট হয়ে থাকে। সূর্যমুখী চাষে খরচ অনেক কম কিন্তু ইনকাম বেশি। তাই তিনি সহ্যমুখী চাষের প্রতি কৃষকদের অগ্রসর হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃষিবিদ মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ভোজ্যতেলের স্বয়ং সম্পূর্ণ অর্জনের লক্ষে সরিষার আবাদ যেভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে, সেভাবে সূর্যমূখীর আবাদও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আমরা সরিষার পাশাপাশি সূর্যমুখীর বড় ধরনের প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। সূর্যমুখী বীজ থেকে একদিকে তেলের চাহিদা পূরণ হবে। তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকদেরকে সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধির জন্য যেমন উৎসাহ দিচ্ছি। তেমনি তাদের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা করছি। সূর্যমুখীর আবাদ কৌশল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ভাবে ধারণা দিচ্ছি। রোগ-বালাই থেকে কিভাবে রক্ষা করা যায় সেজন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রণোদনার পাশাপাশি কৃষকদের পাশে থেকে উৎসাহ প্রদান করছি। এজন্য শুরুতেই ফরিদগঞ্জ উপজেলায় দিনদিন সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com