নওগাঁর রাণীনগরে পরীক্ষামূলকভাবে ডাব বেগুন চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক আসলাম প্রাং। এ জাতের বেগুনের ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় ২লক্ষ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি। আগামীতে বেগুনের এই জাত উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কৃষকদের হাতে তুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস। বেগুনের এই জাত দেখতে ডাবের মতো হওয়ার জন্য এ জাতের নাম দেয়া হয়েছে ডাব বেগুন। বেগুনের এ জাতই আমাদের দেশীয় উচ্চফলনশীল জাত। এই জাতের বীজ সংগ্রহ করা হয়েছে যশোর এলাকার কৃষকের কাছ থেকে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম এ জাতের বেগুন চাষ করেছেন নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষকরা। চলতি মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বেগুনের এই নতুন জাত কৃষকদের দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করানো হয়েছে।
উপজেলার ১৫ বিঘা জমিতে এই জাতের ডাব বেগুন চাষ করা হয়েছে। প্রথম চাষেই হয়েছে বাম্পার ফলন। ফসলের মাঠে এখন গাছে গাছে ঝুলছে ডাব বেগুন। এ জাতের বেগুন গাছে পোকা-মাকড় বা রোগ বালাই কম হয়। গাছে একটানা ৪ মাস ফসল ধরে। ফলের রং লালছে বেগুনি। খুবই নরম। একেকটি বেগুনের ওজন হয় ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম। সরেজমিনে উপজেলার পশ্চিম বালুভরা গ্রামে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, এক থেকে দেড় ফুট লম্বা গাছে বেগুন ঝুলে আছে। গাছের বেগুন ডাব আকৃতির এবং ফলন ভাল হয়েছে। কৃষকরা খুশি মনে মাঠ থেকে বেগুন তুলছেন। সবকটি পটেই বেগুন চাষ করা হয়েছে রাসায়নিক সার ছাড়া। প্রয়োজনে শুধু জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক দেয়া হয়েছে। ওই গ্রামের কৃষক আসলাম প্রাং এর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতায় তিনি এবারই প্রথম শোয়া ২ বিঘা জমিতে এই নতুন জাতের ডাব বেগুন চাষ করেছেন। বেগুন চাষ করে তিনি খুশি। কারণ, অন্য জাতের চেয়ে এই নতুন জাত চাষ করে তিনি অধিক ফলন পেয়েছেন। ফসলে মাঠে পোকা ধরেনি। কোন রোগবালাইয়েও আক্রমণ করেনি। তিনি জমি থেকে বেগুন বিক্রি করছেন। প্রতি কেজি দামও ভালো পেয়েছেন। আরও অনেক বেগুন বিক্রি করতে পারবেন। মাঠে তার খরচ হয়েছিল প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। আর খরচ বাদ দিয়ে তার লাভ হবে প্রায় ২লক্ষ টাকা। তার মাঠের ফলন দেখে উচ্ছ্বাসিত হয়ে একই গ্রামের অন্য কৃষকরা বলেন, ফলন দেখে খুল ভাল লাগছে। আমরাও আগামীতে এই জাতের বেগুন চাষ করবো। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহিদুল ইসলাম বলেন, পরিক্ষামূলক ভাবে এই উপজেলায় প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে এই জাতের বেগুন চাষ করা হয়েছে। বেগুনের এই জাত হাইব্রিড নয়। দেশীয় উচ্চফলনশীল ও উচ্চ মূল্যের হওয়াই ভালো বাজার মূল্যে পেয়ে অধিক লাভবান হয়েছে কৃষকরা। যেহেতু এই জাতের বেগুন চাষ করে কৃষকরা লাভবান, তাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের কৃষকদের মঝে আমরা এই জাত ছড়িয়ে দিতে চাই। এছাড়াও আগামীতে এই জাতের বেগুন পুরো উপজেলায় অধিক পরিমান জমিতে চাষ হবে বলে আশা করছি।