নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়তলী বানিহারী এলাকায় আধিপত্ব বিস্তারকে কেন্দ্র করে বানিয়াহারী ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজনের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষ। এ ঘটনায় মোহনগঞ্জ থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। গত শনিবার ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানান। অভিযোগে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জের বড়তলী বানিয়াহারী ইউনিয়নের কলুংকা গ্রামের ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদারের সাথে একই গ্রামের রায়হান সিদ্দিকী ফারুক ও জাহাঙ্গীর খাঁর এলাকায় আধিপত্ব বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সোহাগ তালুকদারের সাথে একই গ্রামের রায়হান সিদ্দিকী ফারুক প্রতিদ্বন্ধীতা করেন। নির্বাচনে রায়হান সিদ্দিকী ফারুক হেরে যান। পরাজিত হওয়ার পর থেকে রায়হান সিদ্দিকী ও তার লোকজন সোহাগ তালুকদারের লোকজনের ওপর কয়েক দফা হামলা চালায়। গত ৪ ও ৫ এপ্রিল রায়হান সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর খাঁর নেতৃত্বে ৩০-৪০জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে এমদাদ খান, জুলহাস মিয়া, রোকন মিয়া, তরিক মিয়া ফকির, মো. নূরু ফকির, আজিল হক, ইঞ্জিল মিয়া, মানিক মিয়া, বকুল খা, মনসুর খাঁ গুরুতর আহত হয়। আহতদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তারিক ফকির বাদী হয়ে ১১ এপ্রিল রায়হান সিদ্দিকী ফারুক, জাহাঙ্গীর খাঁসহ অন্তত ৪০জনের বিরুদ্ধে মোহনগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে গত ১৯ এপ্রিল মোহনগঞ্জ বাজারে সোহাগ তালুকদারের চাচাত ভাই মাসুদ মিয়া, আপেল মিয়া ও চেয়ারম্যানের ছেলে রাহিমকে নিয়ে ঈদের বাজার করতে মোহনগঞ্জ বাজারে গেলে ফের জাহাঙ্গীর খাঁর, ভাড়াটিয়া সাফিন পাঠান ওরফে অংকনসহ অজ্ঞাত ৫-৬জন তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা মাসুদ মিয়াকে পিটে ছুরিকাঘাত করে হত্যার চেষ্টা করে। এতে মাসুদ মিয়া গুরুতর আহত হন। তাকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মাসুদ মিয়ার ভাই আরশাদ বাদী হয়ে ওই দিনই মোহনগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পুলিশ মামলার আসামি সাফিন পাঠান ওরফে অংকনকে গ্রেপ্তার করা হলে তার স্বীকার উক্তিতে ভাড়া করে হত্যার চেষ্টা করানোর সাথে জরিত থাকায় রায়হান সিদ্দিকী ফারুকের নাম চলে আসে, পরে থাকে আদালতের মাধ্য করাগারে পাঠানো হয় । এর মধ্যে এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায় চেয়ারম্যানের ভাই এস আই অলি উল্লাহ বছরে দুই একবার এলাকায় আসে কিন্তু গ্রামের এই সমস্ত ঘটনার সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই। বড়তলী বানিয়াহারী ইউপি সদস্য রাকিব হাসান খান বলেন, রায়হান সিদ্দিকী ফারুক ও জাহাঙ্গীর খাঁর সব সময় এলাকায় দাঙ্গা হাঙ্গামা বাধিয়ে রাখে। ওরা পারেনা এমন কোন কাজ নেই। অহেতুক চেয়ারম্যানের লোকজনকে মেরে আহত করেছে। আমরা বিষয়টি সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, রায়হান সিদ্দিকী ফারুক নির্বাচনে হেরে গিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রায় সময়ই আমার লোকজনকে মারধর করছে। জাহাঙ্গীর খাঁও তার সাথে আছে। ওরা আমার চাচা ও চাচাত ভাইকে হত্যার চেষ্টা করছে। এই নিয়ে রায়হান সিদ্দিকী ফারুক বলেন, আমার লোকজনকে হয়রানী করার চেষ্টা করছে। চেয়ারম্যান সোহাগ ও তার লোকজন এলাকার নিরীহ মানুষকে নানাভাবে হয়রানী করছে। মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। চেয়ারম্যানের লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগে মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।