বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

একমাসের ব্যবধানে পেঁয়াজ-রসুনের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ

শাহ্জাহান সাজু
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ মে, ২০২৩

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর হিসেবেই গত একমাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৫০ শতাংশ ও রসুনের দাম ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। টিসিবির তথ্যমতে, একমাস আগে বাজারে দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে; তবে এখন তা দাম বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। দেশি রসুন প্রতিকেজি একমাস আগে ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা, এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৮০ টাকায়। আলুর দামও কেজিতে বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৩৮ শতাংশ বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়, যা আগে ছিল ২২ থেকে ২৫ টাকা।
গতকাল শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার এবং লালবাগ ও পালাশী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নতুন করে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ, রসুনসহ আলু, তেল, চিনি, ডিম ও সবজি। পেঁয়াজ-রসুনের এমন দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন বলেন, “ঈদের পর থেকেই পেঁয়াজ, রসুনের দাম হুট করে বাড়ছে। এক মাস আগে ২৮-৩০ টাকা কেজিতে পাইকারি পেঁয়াজ কিনেছি। এখন কিনতে হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে। খরচ হিসাব যোগ করে, কিছুটা লাভে ৫৫ টাকায় খুচরা বিক্রি করছি।” বাড়তি দামের বিষয় তিনি বলেন, আড়তদাররা বলছে সরবারহের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ কম থাকায় দাম বেড়েছে।
এদিকে, রাজধানীর গলির দোকান ও বিভিন্ন স্থানের দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা ও আলু ৪০ টাকা। লালবাগ এলাকার সবজি বিক্রিতা মোহম্মদ শওকত বলেন, “পাইকারিতে আলু কিনতে হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। আমাদের বহন খরচ আছে। নিয়ে আসার পর ৪০ টাকা বিক্রি করছি। আসলে ঈদের পর পাইকারিতে সব কাঁচামালের দাম বেড়েছে। পাইকারা বলছে মালের সরবরাহ কম।” কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা ইকবাল রহিম বলেন, দুই কেজি আলু কিনলাম ৭০ টাকা। আর রসুনের কোয়া ছড়ানো এক কেজি কিনলাম ১২০ টাকা। অথচ এক মাস আগে ভালো রসুনই কিনতে পারতাম এই দামে।”
তিনি বলেন, “আবার সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা করা হলো। এভাবে সবকিছুর দাম বাড়ছে, আমার আয়তো বাড়ছে না। এখন সংসারের খরচ সামলাতে পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছি। আগে মাসে ৩ কেজি তেল কিনলেও এখন কিনছি ২ কেজি।” এদিকে, রাজধানীতে ১০ দিনের ব্যবধানে খোলা চিনির দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা চিনির দাম বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। তবে খোলা চিনি কিছুটা পাওয়া গেলেও প্যাকেটজাত চিনি নেই দোকানে। সরকার গত ৬ এপ্রিল পরিশোধিত প্রতিকেজি খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে ১০৪ টাকা আর পরিশোধিত প্যাকেটজাত চিনির দাম ১০৯ টাকা। কিন্তু নির্ধারিত এই দামের চেয়ে বেশি দারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিটি দোকানে।
কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী আলী হোসেন বলেন, “ঈদের পর থেকে প্যাকেট চিনি পাচ্ছি না। আর খোলা চিনি আমাদের পাইকারিই কিনতে হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে, তাই খোলা চিনি বিক্রিও বন্ধ রেখেছি।”

৩ দিন আগেও প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১৩০ থেকে ১৩২ টাকা। কিন্তু বৃস্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডিম প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া ব্রয়লার মুরগি এখনও বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকা দরে। ঈদের পর সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আলু ছাড়া ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না খুচরা বাজারে। কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা মো. মামুন বলেন, “১০ দিনে কেজিতে সর্বচ্চ ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দাম। ঈদের আগে ঢ্যাঁড়স আমার পাইকারি কিনতাম ২০ টাকা এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৪০ টাকায়। আর বিক্রি করছি ৫০ টাকা দরে।”
দাম বাড়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, বৃষ্টির কারণে সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেড়েছে। পলাশী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি পেঁপেঁ ৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা এবং পোটল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। এদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচ কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে ১০০ থেকে ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে আদার দামও। একমাস আগে প্রতি কেজি আদা ছিল ১৫০ টাকা, এখন ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com