গাজীপুর সিটির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা দিয়েছিলেন। সে টাকার যদি পরিকল্পনা করে পুরোপুরি ব্যবহার হতো, তাহলে এখন আর কোনো নাগরিক সমস্যা থাকত না। অথচ সে টাকার ব্যবহার হয়নি। সে টাকা কই গেল? এমন প্রশ্ন তুলেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। গতকাল সকালে কাউলতিয়া এলাকায় গণসংযোগ শেষে ২২নং ওয়ার্ড আলোচনা সভায় বক্তব্যকালে এ প্রশ্ন তোলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আজমত উল্লা খান বলেন, টাকা না থাকলে এক কথা, আর থাকার পরও কাজ না করতে পারাটা মেনে নেওয়া যায় না। আজকে নানা সমস্যায় জর্জরিত গাজীপুর মহানগর। এক অদক্ষ ব্যক্তি দায়িত্ব পাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভোটারদের উদ্দেশে এই প্রার্থী বলেন, মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী সিটি করপোরেশন গঠন করেননি। বরং নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর জন্যই এই গাজীপুর সিটি গঠন করা হয়েছিল। অথচ নাগরিক সুবিধা না বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ওপর ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে। তিনি নির্বাচিত হতে পারলে আগামীতে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি ট্যাক্সের বোঝাও কমিয়ে দেবেন। তিনি আগামী ২৫ মে তার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে নগরবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, নগরবাসীর অন্যতম সমস্যা হলো বর্জ্য দুর্ভোগ। এর সমাধানকল্পে সরকার থেকে ৭৫০ কোটি টাকা দিয়েছিল। অথচ এর ব্যবহার না হওয়ায় বর্জ্য নিয়ে মহাবিপাকে নগরবাসী। তিনি নির্বাচিত হতে পারলে নগরবাসীকে বর্জ্যরে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেবেন। বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করবেন তিনি। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাতি মার্কা প্রচারণা নিয়ে নগরীর বিভিন্ন থানা ওয়ার্ডে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ব্যাপক গণসংযোগ করে যাচ্ছেন। এ সময় তিনিসাধারণ জনগন ও ভোটারদের কাছে হাত জোড় মিনতি করে,একটি ভোট প্রার্থনা করছেন। তিনি বলেন তার বাবা দীর্ঘ ১৮ বছর জেলখানায় বন্দি বাবার জন্য আবেগ ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে সাধারণ ভোটারদের ও জনগণের কাছে, ওয়াদা দিচ্ছেন, আপনারা আমাকে নির্বাচিত করলে আমি কথা দিচ্ছি,আপনাদের পাশে থাকবো। অনেকেই তো ভোট দিয়েছেন আমাকে একটিবার সুযোগ করে দিন। বর্তমানে নৌকার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সরকার শাহানুর ইসলাম রনি হলেন বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে। গাজীপুরে বিএনপিতে তাদের সরকার পরিবারের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। ফলে এই পরিবারের কেউ প্রার্থী হলে তিনি নির্বাচনের মাঠ গরম করতে পারবেন বলে মনে করেন তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী। গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছিলেন তার চাচা হাসান উদ্দিন সরকার। ১৬ মে মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনার সময় সাংবাদিকদের বলেন, আমি যেহেতু বিএনপি পরিবারের সন্তান। আমার চাচা, বাবা সবাই বিএনপি করেন। আমি প্রচার প্রচারে ভালো সাড়া পেয়েছি জনগণ ভোট দিতে চায়, তৃণমূল কর্মীদের সমর্থন পেয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমার চাচা এই গাজীপুরের রূপকার। আমার বাবা বিএনপি করার কারণে প্রতিহিংসার স্বীকার হয়ে ১৮ বছর ধরে কারাগারে বন্দি। বাবা, চাচার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে, সাধারণ মানুষের মতামত নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। বিএনপি হয়তো নির্বাচনে আসছে না কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপির সমর্থন আমার প্রতি রয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমার সাথে সবাই থাকবেন। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ করে দিলে আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান চাচার সাথে।