গাজীপুরের কালীগঞ্জ রাজা রাজেন্দ্র নারায়ণ (আরআরএন) পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে রাশেদ্বীন সরকার। বিকেলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাশ দিয়ে মাঠে খেলতে যাচ্ছিল। এমন সময় চোখে পড়ে নদীর ধারে ফুটে থাকা হুরহুরে ফুলের দিকে। তার পথ থমকে যায় রাশেদ্বীনের। ছুটে যায় ফুলের কাছে উপভোগ করতে থাকে সৌন্দয্য। এশন ফুল আগে কখনো দেখেনি বলে নাম বলতে পারছে না সে। তবে ফুলের সৌন্দয্য তার মনে খুব ধরেছে। তবে অজানা জানার কৌতুহল নিয়ে রাশেদ্বীন ছুটে যায় নরুল ইসলাম নামে এলাকার তার এক চাচার কাছে। পরে তিনি এসে মোবাইল ফোনে ছবি তোলে গুগলে সার্চ দিয়ে নদীর ধারে ফুটে থাকা অজানা সৌন্দর্য ফুলে নাম ও কিছু তথ্য। প্রতিবেদকের সাথে কথা কিশোর রাশেদ্বীনের। সে বলে, অজানা একটি ফুল ও তার সৌন্দর্য দেখে আমি খুবই মুগ্ধ। যতদূর জেনেছি এ ফুল ও উদ্ভিদটি আমাদের দেশে জন্মায় না। তবে এটি নাকি প্রায় বিলুপ্ত জাতের। নুরুল ইসলাম মূলত একজন শখের ফটোগ্রাফার। তিনি বলেন, অজানাকে জানার আমারও খুব কৌতুহল। রাস্তার ধারে ফুটে থাকা ফুল গাছ বা জন্মানো উদ্ভিদের ছবি তুলে সব সময় গুগলে সার্চ দিয়ে জানার চেষ্টা করি। শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ফুলে থাকা ফুলটি আমার চোখে পড়েনি। কিশোর রাশেদ্বীন আমাকে জানালে আমি সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই এবং সেটার ছবি তুলে গুগলে সার্চ দিয়ে নিজেও জানি এবং ওকে জানানোর চেষ্টা করি। তুবে নদীন ধারে ফুটে থাকা এই হুরহুরে ফুল প্রথম দেখাতেই যে কাউকে মুগ্ধ করবে। হুরহুরে ফুল হচ্ছে Cleomaceae পরিবারের ঈষবড়সব গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদের নাম। এটি মাকড়সা ফুল হিসেবে পরিচিত। বিজ্ঞানীকভাবে একে Cleome Hassleriana বলা হলেও ইংরেজীতে এটিকে Spider Flower Spider ev Plant বলে। সুষমা, বিচিত্রা এ গাছটি অনেকের কাছে রিফিউজি লতা হিসেবেও পরিচিত। এটি দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে এবং দক্ষিণপূর্ব ব্রাজিলের স্থানীয় প্রজাতি। এটি বর্ষজীবি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এদের উচ্চতা ১৫০ সেন্টি মিটার পর্যন্ত হতে পারে। হুরহুড়ে গাছের বিশেষ প্রজাতি হিসেবে চাষ হয়। তবে এর দৃষ্টিনন্দন ফুল থাকায় শোভাবর্ধক উদ্ভিদ হিসেবে চাষ হয়। হুরহুরে ফুল গাছ ঝোপালো উদ্ভিদ। ডালে অসংখ্য পাতা থাকলেও সেগুলো ছোট ও সবুজ। ফুলগুলো গোলাপী, বেগুনী ও হলুদ রঙের হয়ে থাকে। হুরহুরে ফুলের বীজ আকৃতি দেখতে অনেকটা শামুকের খোলসের মত। এটি আকর্ষণী, দ্রুত বর্ধনশীল গাছ। এটি বিভিন্ন রঙের ফুল মনোরভ সৌন্দর্য তৈরি করে। দকিণ আমেরিকা ও ওয়েষ্ট ইন্ডিজের স্থানীয় তথাকথিত হুরহুড়ে ফুলটি ১৮০০ এর শতকের গোড়ার দিকে উত্তর আমেরিকার, ইউরোপ ও যুক্তরাজ্যের বাগানগুলোতে প্রদর্শতিত হয়েছেল। গাছগুলো ৪-৮ ইঞ্চি প্রশস্ত। মৌটুসী পাখি ফুলগুলোকে বেশি পছন্দ করে। গাছগুলো তাপ এবং খড়া সহ্য করতে পারে।