দিনাজপুরের হিলি বাজারে তালশাঁস বিক্রিতে ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা। এটি গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী মৌসুমি ফল। এই ফলের স্বাদ ভিন্ন রকম। তাই এই সুস্বাদু তালশাঁস খেতে বাজারে ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। গত বছরের চেয়ে এই বছর তালশাঁসের দাম অনেকটা বেশি অভিযোগ ক্রেতাদের। আবার ফলন কম তাই দাম বেশি, বলছেন ব্যবসায়ীরা। হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, তালশাঁস ব্যবসায়ীরা তালের খামাল দিয়ে বসে আছেন, আর তাল কেটে শাঁস বেড় করতে ব্যস্ত তারা। বছরের প্রথম মৌসুমী ফল, এ ফল খেতে তার চারপাশে ভিড় করছেন ক্রেতারা। প্রতিজন ১৫ থেকে ২০টি করে অর্ডার দিচ্ছেন। এতে কাটতে হিমশিম খাচ্ছেন এসব তালশাঁস ব্যবসায়ীরা। চলতি মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে এবার তালের ফলন কম। গেলো বছর ৩ থেকে ৪ টাকা দরে প্রতিটি তাল ক্রয় করতো তাল ব্যবসায়ীরা। এইবার তা কিনতে হচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকা দরে। একটা তালের মধ্যে থাকে ২ থেকে ৩টি শাঁস। এখন প্রতিটি তালশাঁস বিক্রি করছেন ৬ টাকা পিস। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুতে উঠতে শুরু করে তালের শাঁস। এদিকে যতদিন যাচ্ছে, ততই তালের গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। আর তাতে অনেকটায় দুর্লভ হয়ে যাচ্ছে তালের শাঁস। এক সময় গ্রামগঞ্জের মাঠে-ঘাটে আর রাস্তার পাশে দেখা যেতো তালের গাছ। এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। আগের দিনে মানুষ তালের শাঁস কিনে খেতো কম, কেননা হাতের নাগালেই পাওয়া যেতো। এখন সেই তাল টাকার বিনিময়ে কিনে খেতে হচ্ছে। কথা হয় তালশাঁস কিনতে আসা রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, তালের শাঁস স্বাদে ভরা। আমারসহ পরিবারের সবার পছন্দ, তাই তালশাঁস কিনতে আসছি। পরিবারের জন্য ২০টির অর্ডার দিয়েছি। আরেকজন ক্রেতা তারিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্যান্য ফলের চেয়ে তালশাঁসের স্বাদ আলাদা। অন্য ফলের মাঝে এই স্বাদ খুঁজে পাই না। প্রতি বছর তাল উঠলে আমি প্রতিদিন ৫ থেকে ৭টা করে তালশাঁস খেয়ে থাকি। তাল ব্যবসায়ী আতিক বাবু বলেন, তাল নিয়ে আসলাম সান্তাহার থেকে। প্রতি বছর হিলির বিভিন্ন স্থান থেকে তালগাছ থেকে তাল কিনতাম। এবার হিলির তেমন কোনো তালগাছে তাল ধরেনি। ফলে দূর থেকে ট্রাকে করে কিনে আনছি। গত বারের চেয়ে এবার দাম বেশি। এবার খরচ দিয়ে প্রতিটি তাল ৯ টাকা করে কিনে আনছি। ৭ টাকা দিয়ে কিনে তা বিক্রি করছি ১৪ থেকে ১৫ টাকা। মানুষের অর্ডার অনুযায়ী তাল কাটতে হিমশিম খাচ্ছি। আল্লাহ দিলে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কামাই হচ্ছে।