অর্থাভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা কমালো জাতিসংঘের খাদ্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)। এ নিয়ে তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো বরাদ্দ কমানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। গত সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে এক মেইলের মাধ্যমে ডব্লিউএফপির মুখপাত্র কুন লি এ তথ্য জানিয়েছে।
মুখপাত্র কুন লি জানান, অপর্যাপ্ত অনুদানের কারণে আগামী ১ জুন থেকে প্রতি মাসে জনপ্রতি রেশন ১০ ডলার থেকে কমিয়ে ৮ ডলার করা হবে। এর আগে মার্চে পূর্ণাঙ্গ মাসিক বরাদ্দ ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ১০ ডলার করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ রেশন সরবরাহ অব্যাহত রাখতে হলে জরুরিভাবে ৫৬ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন যা বর্তমানে নেই। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের। এদিকে জাতিসংঘের এ সিদ্ধান্তে সাহায্যকারী সংস্থা ও ত্রাণকর্মীরা বলছেন, মার্চে প্রথম তহবিল কাটছাঁটের পর থেকেই রোহিঙ্গা শিবিরে ইতোমধ্যে অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়েছে। নতুন এ ঘোষণায় শিবিরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে বলে শঙ্কা করছেন তারা। শিবিরের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গা যুব সমিতির প্রধান খিন মং এএফপিকে বলেন, খাদ্য সহায়তা কমানোর নতুন সিদ্ধান্ত জাতিসংঘের একটি লজ্জাজনক পদক্ষেপ।
তিনি আরও জানান, আমি মনে করি এটা রাজনৈতিক। এ সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর চক্রান্ত বলে মনে করেন তিনি। এদিকে জাতিসংঘ ও বিদেশী কূটনীতিকরা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের বাইরে কাজ করার অনুমতি দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে এতে করে স্থানীয় জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে আরও নিরুৎসাহিত করতে পারে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। বর্তমানে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজার, টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছেন।