বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

আজ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৮ মে, ২০২৩

বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ সোমবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করা হবে। আইএসপিআর সূত্রে প্রকাশ, আজ সোমবার সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণে “‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৩’-এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে এবং বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ শান্তিরক্ষীদের নিকটাত্মীয় ও আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে।

এছাড়া সকালে ‘শান্তিরক্ষী দৌড়-২০২৩’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরার লক্ষ্যে বিশেষ জার্নাল ও জাতীয় দৈনিকগুলোয় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি চ্যানেলে বিশেষ টকশো প্রচারিত হবে। শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি চ্যানেলে এরই মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির বাণী : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করেছে। তিনি ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষ্যে গতকাল রোববার এক বাণীতে এ কথা বলেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আজ সোমবার (২৯ মে) যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি এ দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শান্তিরক্ষীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’। বিশ্বশান্তি রক্ষার মহান দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আত্মোৎসর্গকারী বীর শান্তিরক্ষী সদস্যদের তিনি পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ -জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনুসৃত এ আদর্শ অনুসরণ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি পরিচালিত হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার মহান কাজ করছে এবং শান্তিরক্ষায় এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে অদ্যাবধি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী সদস্যরা সর্বোচ্চ পেশাদারি মনোভাব, আনুগত্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে চলেছেন। তাদের অনন্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলের পাশাপাশি শান্তিরক্ষা মিশনে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম শীর্ষ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পেশাদারিত্বের পাশাপাশি অর্পিত দায়িত্বের প্রতি একনিষ্ঠতা, শৃঙ্খলা, দক্ষতা ও মানবিক আচরণ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের এ সাফল্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। রাষ্ট্রপতি প্রত্যাশা করেন, ‘সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আমাদের শান্তিরক্ষী সদস্যরা আগামী দিনগুলোতেও বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠার এই ধারা অব্যাহত রাখবে।’ তিনি ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বাণী : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিনির্মাণ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। নারীর অধিকার এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রচেষ্টা উইম্যান পিস এন্ড সিকিউরিটি এজেন্ডা বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সোমবার আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল রোববার দেয়া এক বাণীতে একথা বলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ পালিত হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। এ দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তিনি গর্বভরে স্মরণ করেন এবং শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সেই সকল শান্তিরক্ষীদের যাঁরা বিশ্বশান্তির জন্য অকাতরে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়ে বিশ্ব দরবারে দেশের পতাকাকে উজ্জ্বলতর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আজ সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশসমূহের অন্যতম বাংলাদেশ। জাতিসংঘ মিশন এবং বহুজাতিক বাহিনীতে আমাদের শান্তিরক্ষীদের অনন্য অবদান বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং এদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাসম্পন্ন রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। একইসঙ্গে বিশ্বের অর্থনৈতিক ও সামরিকভাবে শক্তিশালী দেশসমূহের সঙ্গে আমাদের পারস্পরিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শান্তি স্থাপনে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীগণ পেশাদারিত্ব, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ঐ সকল দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে শান্তিরক্ষায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী দেশ হিসেবে যে গৌরব ও মর্যাদা লাভ করেছে, তা আমাদের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য পেশাদারিত্ব, সাহস, বীরত্ব ও দক্ষতারই অর্জিত ফসল ।’
বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতি প্রধানমন্ত্রী তাঁর সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীগণ যাতে আরো আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জাতিসংঘের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন, সে জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের সকল প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, শান্তিরক্ষী সদস্যগণ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব, সাহস ও নিষ্ঠা দ্বারা বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি শক্তিশালী শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবেন এবং দেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে এবং একই বছর ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় প্রদত্ত তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছিলেন, ‘মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য শান্তি অত্যন্ত জরুরি এবং তাহা সমগ্র বিশ্বের নর-নারীর গভীর আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটাইবে।’ সাধারণ অধিবেশনে তিনি বিশ্বের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থনের বিষয়ে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তখন থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের শান্তিপ্রিয় ও বন্ধুপ্রতীম সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলছে এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘের অধীনে পরিচালিত সকল শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিশ্ব শান্তি ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ‘জুলিও-কুরি শান্তি পদক’-এ ভূষিত করা হয় ৷
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দর্শন অনুসরণ করে বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তির একনিষ্ঠ প্রবক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ‘আমরা ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘে‘ শান্তির সংস্কৃতি’ সংক্রান্ত ঘোষণা এবং কর্মসূচি রেজ্যুলেশন আকারে উত্থাপণ করি যা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পরবর্তীতে, জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ইন্টান্যাশনাল ইয়ার অভ কালচার অভ পিস’ হিসেবে ঘোষণা করে এবং ২০০১-২০১০ সালকে দ কালচার অভ পিচ এন্ড দ্যা ডিকেড অভ ননভায়োলেন্স হিসেবে ঘোষণা করে। শান্তির বার্তাকে সর্বাত্মকভাবে সুসংহত করতে এবং এজেন্ডা ২০৩০ বাস্তবায়নে ‘কালচার অভ পিস’ প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য বলে বাংলাদেশ মনে করে ।
প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য এবং সকল শান্তিরক্ষীর সাফল্য ও মঙ্গল কামনা করেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com