শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১২:৩০ অপরাহ্ন

হজের সফর শুরুর মাস জিলকদ

ইসলাম ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ জুন, ২০২৩

জিলকদ মাস এলেই সারা বিশ্ব থেকে হজের সফর শুরু হয়। পরের মাস জিলহজেই পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়। ইতিমধ্যে চলতি জিলকদ মাসেই হজের সফর শুরু হয়েছে। এবার যারা হজের নিয়ত করেছেন সেসব হজ পালনকারীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় যাওয়া শুরু করেছেন।
পবিত্র কোরআনের ঘোষণায় হিজরি বছরের তিনটি মাস হজের জন্য নির্ধারিত। হাদিসের ব্যাখ্যায় সেই তিন মাসের উল্লেখ করা হয়েছে যথাক্রমে- শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। মূলত শাওয়াল মাসে হজের কাজ শুরু হয়ে জিলহজ মাসে এসে তা শেষ হয়।
হজের আগের দুই মাসকে হজের মাস এ জন্য বলা হয়েছে, যাতে হজ আদায়ে ইচ্ছুক লোকেরা হজের প্রস্তুতি নিতে পারেন। কেননা যাঁরা হজে যাওয়ার নিয়ত করেছেন, তাঁদের জন্য হজের পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া, হজের নিয়ম-কানুন জেনে নেওয়া, হজের দোয়া-কালাম, ইহরামের নিয়ত ও তালবিয়া বিশুদ্ধভাবে শিখে নেওয়া- এসবই জরুরি বিষয়।
প্রথমত: কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করা
হজ পালনকারীদের জন্য প্রথমত মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা জরুরি। কেননা তারা হজে যাওয়ার সামর্থ্য ও সক্ষমতা পেয়ে মহান আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ও নেয়ামতের অধিকারী হয়েছেন। সুতরাং এ নেয়ামতের ওপর আল্লাহতায়ালার প্রতি শুকরিয়া আদায় করা একান্ত কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করো, তাহলে তোমাদের আরও বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয়ই আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সুরা ইবরাহিম: আয়াত ৭)
দ্বিতীয়ত: বিশুদ্ধ নিয়ত করা
হজ একটি ইবাদত। তাই হজের জন্য বিশুদ্ধ নিয়ত খুবই জরুরি। কেননা নিয়তের ওপরেই কাজের ফল নির্ভর করে। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘প্রতিটি কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল।’ (বুখারি ১)
সুতরাং হজে গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের এ নিয়ত করতে হবে যে, শুধু আল্লাহ তাআলার হুকুম পালন ও তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই হজ পালন; হজ পালনে দুনিয়ার কোনো উদ্দেশ্য থাকবে না।
তৃতীয়ত: হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য উপলব্দি করা
হজ আদায়ে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য হজের গুরুত্ব, তাৎপর্য উপলব্ধি করা আবশ্যক। হজের মধ্যে ইসলামি শরিয়তের অনেক মৌলিক বিষয় শামিল। আল্লাহ তাআলা হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামকে হজের ঘোষণা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন এভাবে-
‘আর মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও, তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে ও সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটসমূহের পিঠে (সওয়ার হয়ে) তারা আসবে দূর-দূরান্তর পথ অতিক্রম করে। যাতে তারা তাদের কল্যাণের জন্য উপস্থিত হতে পারে এবং তিনি তাদের গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু থেকে যা রুজি হিসাবে দান করেছেন ওর উপর ( জবাইকালে কোরবানির) বিদিত দিনগুলোতে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করতে পারে। এরপর তোমরা তা থেকে আহার করো এবং দুঃস্থ, অভাবগ্রস্তকে আহার করাও।’ (সুরা হজ: আয়াত ২৭-২৮)
চতুর্থত: হজের ফজিলত
হজের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন, ‘এক ওমরাহ পরবর্তী ওমরাহ পর্যন্ত গুনাহগুলো মুছে দেয় আর হজে মাবরুরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া কিছু নয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
মুসলিম উম্মাহ শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ মাসের প্রথম কয়েক দিনের মধ্যে হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে পবিত্র নগরীতে উপস্থিত। ইহরামকারীরা সেখানে গিয়ে ওমরাহ সম্পাদন করে থাকেন। যার বিনিময়ে মহান আল্লাহ তাআলা তাদের বিগত জীবনের গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন। আর যারা সুস্থ ও সুন্দরভাবে হজ সম্পাদন করতে পারবেন তাদের জন্য থাকবে সুনিশ্চিত জান্নাতের ঘোষণা।
মনে রাখতে হবে
হজ একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এর জন্য আর্থিক প্রস্তুতির সঙ্গে শারীরিক প্রস্তুতি খুববেশি জরুরি। হজের নিয়ম-কানুনগুলোর প্রস্তুতি না থাকলে হজের বিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হবে না।
তাই হজে রওয়ানা হওয়ার আগে শাওয়াল ও জিলকদ মাসে হজ পালনকারীদের প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। যারা এখনও হজে যায়নি কিংবা যারা হজে চলে গিয়েছে তাদের সবার জন্য হজের প্রস্তুতি নেওয়ার অনেক সময় বাকি। হজের সময় আসার আগে হজ সম্পর্কিত যাবতীয় কাজ যথাযথভাবে আদায় করা জরুরি।
আল্লাহ তাআলা সব হজ পালনেচ্ছুকদের হজের যথাযথ প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com