বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খান আর নেই। গতকাল শুক্রবার (৯ জুন) দুপুর সোয়া ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি। ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঢামেক সূত্র জানায়, সিরাজুল আলম খান বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণ, প্রস্রাবে জটিলতা নিয়ে ২০ মে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তখন ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছিলেন, কয়েকদিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েও উন্নতি হচ্ছিল না সিরাজুল আলম খানের। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
এরপর বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ছয় দফার সমর্থনে জনমত গঠনে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন সিরাজুল আলম খান। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা বাতিল ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-শ্রমিকদের সম্পৃক্ত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন তিনি। ষাটের দশকের প্রথমার্ধে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার ‘নিউক্লিয়াস’ গঠিত হয়। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে গিয়ে নিউক্লিয়াস গড়ে তোলার মূল উদ্যোক্তা সিরাজুল আলম খান। এরপর ১৯৭২ সালে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়। তিনি কখনও জাসদের নেতৃত্বে আসেননি। তবে জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের কাছে ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তিনি কখনো জনসম্মুখে আসতেন না। আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।
সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে ফখরুলের শোক: বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সিরাজুল আলম খানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (৯ জুন) এক শোকবার্তায় তিনি মহুমের আত্মীয়-পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান। ফখরুল বলেন, তিনি আমাদের সবার মধ্যে স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকবেন।