নীলফামারী জেলার চিলাহাটির বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা। ইতিমধ্যে ভাইরাস জনিত এ রোগ গ্রামে গ্রামে ছড়িয়েছে পড়েছে। এ রোগে গরুর চামড়ার ক্ষতি হওয়ায় কোরবানির ঈদ সামনে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। এতে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন খামারি ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা। তবে রোগটি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা, খামারি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান-এ রোগটি সাধারণত গ্রীষ্মের শেষ ও বর্ষার শুরুতে মশা-মাছির বিস্তারের সময় ব্যাপক আকার ধারণ করে। মশা-মাছির ও খাবারের মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে এ রোগ ছড়ায়। টিকা দিয়ে আক্রান্ত থেকে গরুকে রক্ষা করা যায়। আক্রান্ত হওয়ার পর আক্রান্ত গরু আলাদা ও মশারির ভেতর রাখা জরুরি। এ রোগের লক্ষ্মণ হচ্ছে আক্রান্ত গরুর গা হঠাৎ গরম হয়ে যায়। শরীর জুড়ে ছোট ছোট মাংসপি-ের মতো ফুলে ওঠে। অনেকটা আঁচিলের মতো। পা, ঘাড়, মাথায় এসব বেশি ওঠে। চামড়া উঠে ক্ষতে পরিণত হয়। এ রোগে আক্রান্ত গরু খাওয়া ছেড়ে দেয়। সব ধরনের গরুই এ রোগে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত গবাদিপশুর চোখ দিয়ে পানি ঝরে চোখ অন্ধ হয়েও যেতে পারে। এ রোগে মারা যাওয়ার হার ১-৩ শতাংশ। ষাঁড় গরুর ক্ষেত্রে ইনফাটিলিটি এবং গর্ভবতী প্রাণীতে গর্ভপাত ঘটে। খুরা রোগের চেয়েও এটি বেশি ভয়ঙ্কর। আক্রান্ত গরু নিয়ে প্রতি দিনই প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে বা গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে খামারি ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা ভিড় করছেন। চিলাহাটির ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের দীপক রায় বলেন- আমার গরুতে এ রোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে, প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ শত টাকার ওষুধ কিনতে হচ্ছে। একেবারে ইউনিয়নের নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান- তাঁর দুটি গরু দেড় মাসে আগে আক্রান্ত হয়। মোটামুটি সুস্থ হলেও পায়ে ও বুকে ক্ষত রয়েছে। গরুগুলো ঝিমায়, খাবার কম খায় এবং ক্ষত স্থান দিয়ে রক্ত ও পুঁজ বের হয়। পল্লী চিকিৎসকরা বলেন- অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় গত দেড় মাসে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের ওষুধ বেশি বিক্রি হচ্ছে। ডোমার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা? ডা: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক জানান- আমরা উপজেলা থেকে বিনামূল্যে ইনজেকশন ও ট্যাবলেট দিচ্ছি। খামার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করার পরামর্শ এবং সচেতনা বৃদ্ধি জন্য উঠান বৈঠক করছি। বিশেষ করে টেকনিশিয়ান এবং পল্লী চিকিৎসকদের অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে নিষেধ করছি, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে গরুর দুর্বল হয়ে যায়। আক্রান্ত গরুর চামড়ার ক্ষতি হয়ে সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে কোরবানির ঈদে কোনো ক্রেতাই ক্ষত গরু কিনতে চান না। এতে খামারিদের বিপাকে পড়তে হয়। তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।